নুরুল করিম আরমান, লামা ॥
চাঁন মিয়া। বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলা সদর ইউনিয়নের পশ্চিম বাজার পাড়ার বাসিন্দা। গত ৭ বছর আগে হঠাৎ স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে তিনি মারা যান তিনি। এরপর বড় মেয়ে এবং দুই ছেলেও বিয়ে করে পৃথক হয়ে যান স্ত্রী রোকেয়া বেগমের কাছ থেকে। ছোট মেয়ের সঙ্গে একার সংসারে জীবনযুদ্ধ শুরু করেন বিধবা রোকেয়া বেগম। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে রোকেয়া বেগমের সামান্য উপার্জনে কোন মতে জীবিকা নির্বাহ করে চলছিল। এরই মধ্যে পাখি আক্তার বিয়ের উপর্যুক্ত হয়ে পড়েন। অভাবে জর্জরিত সংসারে ছোট মেয়ে পাখি আকতার (১৯) এর বিয়ে দেওয়া নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন দুঃখী মা’টি। তাঁর পক্ষে এই বিয়ের খরচ বহন করা ছিল একেবারেই অসম্ভব। এ করুণ অবস্থার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক দুঃখীনির পাশে দাঁড়ান আলীকদম সেনাবাহিনীর ৩১ বীর। এ বীরের জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. সাব্বির হাসান পিএসসি’র আন্তরিকতায় ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুঃখী রোকেয়া বেগমের মেয়ে পাখি আকতার এর বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ে উপলক্ষে ১০০ জন বর পক্ষের খাবার এর আয়োজন ও সার্বিক বাবস্থাপনায় সমন্বয় সাধন করা হয়। এছাড়াও কনের জন্য স্বর্ণের কানের দুল এবং প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন ব্যাবহারিক দ্রব্যসামগ্রী প্রদান করেন জোন কমান্ডার লে.কর্নেল মো. সাব্বির হাসান পিএসপি।
আলীকদম সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রোকেয়া বেগম বলেন, জোন কমান্ডার মহোদয় সার্বিক সহযোগিতা না করলে, হয়ত এত খরচ করে মেয়েকে দিতে পারতাম না। আমি ও আমার পরিবার জোন কমান্ডারের নিকট চির ঋণী হয়ে গেলাম।
এদিকে মহৎ এ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম জানায়, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ পাহাড়ে বসবাসকারীদের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। একজন দুঃখী মায়ের মেয়ের বিয়ের আয়োজনের মধ্য দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন জোন কমান্ডার মহোদয়।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. সাব্বির হাসান পিএসসি জানান, ভবিষ্যতেও একইভাবে লামা ও আলীকদম উপজেলার দুস্থ এবং অসহায় পরিবারের পাশে থাকবে আলীকদম সেনাবাহিনী।