স্থানীয় এনজিও সংস্থা ‘টংগ্যা’ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এর অর্থায়নে বিলাইছড়ি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন ‘ইন্টিগ্রেটেড সাপোর্ট টু প্রমোট প্রাইমারী এডুকেশন ফর রিমোট এরিয়াস অব রাঙামাটি হিলট্র্যাক্টস’ (ওঝচচঊজঅজঐঞ’ প্রকল্পের ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের নিয়ে রোববার উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে বাৎসরিক সমন্বয় সভার আয়োজন করেছে।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়ক মানবাশীষ চাকমা সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুভমঙ্গল চাকমা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হামিদ।
বাস্তবায়নাধীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্পের উপজেলার সুদূর প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১০টি স্কুলের মধ্যে ৮টি স্কুল জাতীয়করণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। যা সকল স্কুল হতে এ বছর সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে ৮৫জন ছাত্র-ছাত্রী। কিন্তু চলতি বছরের ৩১ডিসেম্বর প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল সমাপ্ত হতে চলছে। এ নিয়ে শংকায় রছেয়েন ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট এনজিও টংগ্যা কর্তৃপক্ষ। কারণ ডিসেম্বর’১৬ এর পর সম্মানীর অভাবে শিক্ষকরা ক্লাশ চালিয়ে যেতে না পারলে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। কেন না শিক্ষকদেরও তো পরিবার পরিজন রয়েছে। বিনা সম্মানীতে কিভাবে তারা স্কুল চালিয়ে যাবেন সেটাও একটা মানবিক প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে সকল স্কুলের প্রায় ৮শ’ জন ছাত্র-ছাত্রীর জীবন বে-কায়দায় পরতে পারে। যেহেতু ডিসেম্বর মাসে সকল স্কুলভর্তি সম্পন্ন ও নিশ্চিত করতে হবে এবং ১লা জানুয়ারী বই বিতরণ সম্পন্ন করে যথারীতি ক্লাশ চালিয়ে যেতে হবে। এর পর কোন মাসে স্কুল চালানো ব্যহত হলে ছাত্র-ছাত্রীরা বিপাকে পরবে। তাই এসব বিষয় নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও উপায় অবলম্বনে এবছর বার্ষিক শিক্ষক সমন্বয় সভার গুরুত্ব পেয়েছে বেশি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সমম্বয়ক মানবাশীষ চাকমা বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন প্রকল্পটি এক্সটেনশন করে যথারীতি প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা ও প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। যা কিছুদিনের মধ্যে হয়তো একটা ইতিবাচক উত্তর পাওয়া যাইতে পারে। তবে প্রকল্প এক্সটেনশন ও অনুমোদন হতে হয়তো দীর্ঘ সময়ও লাগতে পারে। তাই স্কুল যথারীতি চালিয়ে যেতে হবে। কখনও পাঠদানে ব্যঘাত ঘটানো যাবে না। আর মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যে প্রকল্প এক্সটেনশন করবে তারও কোন নিশ্চয়তা রাখা যায় না। তাই সুবিধা বঞ্চিত দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য উক্ত প্রকল্পের প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ জীবিত রাখার ক্ষেত্রে প্রশাসন তথা সরকারের উদ্যোগ ও সহায়তা অত্যন্ত জরুরী এখনই বলে প্রার্থনা কামনা সকল শিক্ষক ও অভিভাবকদের। উপরন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা সুবিধা বঞ্চিত জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে বিপ্লবী এনজিও সংস্থা ‘টংগ্যা’ কর্তৃপক্ষেরও একই কামনা।
উপজেলা চেয়ারম্যান শুভমঙ্গল চাকমা বলেন, স্কুলগুলো চালিয়ে যেতে হলে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের কিছু করতে হবে। তবেই আমরা কিছু করতে পারব বা সহায়তা দিতে পারব।
সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ৪নং বড়থলি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অনচন্দ্র ত্রিপুরা, যমুনাছড়ি বমপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি থাংতে বম, এগুজ্যাছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কনক তঞ্চঙ্গ্যা, গাছকাবাছড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শান্তি কুমার তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।