পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু-বিষু-বিহু-চাংক্রান…) ও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। শুক্রবার পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র-যুব সমাজের উদ্দেশ্যে এবং দেশবাসীকে এই শুভেচ্ছা জানান।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, বৈ-সা-বি উৎসব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি সুদৃঢ় করার উপলক্ষও। বৈ-সা-বি’র চেতনায় ৮০’র দশকে পাহাড়িরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, ’৯২-এ লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে পাজন (হরেকরকম সবজির মিশ্রণে রান্না তরকারি) চেঙ্গী নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল, ’৯৬ নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের নিশ্চয়তার দাবি জানিয়ে পিসিপি, পাহাড়ি গণপরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন র্যালি করেছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্য সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করার আহ্বান জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর স্ব স্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে শাসকগোষ্ঠী নানা কৌশলে পাহাড়িদের কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন কিংবা বিকৃত করে কৃত্রিমতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করছে। তাই স্ব স্ব জাতিসত্তার ঐতিহ্য সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করা প্রয়োজন। জাতির ঐতিহ্য-সংস্কৃতি এবং অস্তিত্ব রক্ষার্থে তরুণ প্রজন্মে ছাত্র-যুব-নারীদের এগিয়ে আসতে হবে।
নেতৃদ্বয় বৈ-সা-বি’তে বিগত দিনের সকল দুঃখ-গ্লানি, অনৈক্য, হিংসা ও শত্রুতা ভুলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করে নতুন বছরে নব উদ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম পরিচালনা করবে বলে পাহাড়ের সকল রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি প্রত্যাশা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃদ্বয় খাগড়াছড়িতে জুনান চাকমা, রুবেল ত্রিপুরা ও ধন রঞ্জন চাকমা এবং রাঙামাটিতে অনিক চাকমা খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক বিচার, কারাগারে বন্দি নিরপরাধ বম জাতিসত্তার লোকজনসহ রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মিজোরামে আশ্রিত বম শরণার্থীদের ফেরত আনতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।(বিজ্ঞপ্তি)