বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা ও লুটের ঘটনার সঙ্গে পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘সংশ্লিষ্টতা’ পাওয়ার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, “ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় যা যা করণীয়, সবই করছে সরকার। এ ঘটনায় কুকি চিং নামে একটি সংগঠন জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।”
রুমায় সোনালী ব্যাংকে ওই ডাকাতির ঘটনার পরদিন বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই সময়ই বান্দরবানের রুমায় সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় দিনে দুপুরে ডাকাতির খবর আসে।
মন্ত্রী বলেন ঘটনার পরপরই পুলিশ ও বিজিবি সেখানে অভিযান চালাচ্ছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও তাতে যোগ দেবেন।
“পুলিশ মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে রয়েছে। তারা সার্বিক দিক খতিয়ে দেখছে।”
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকটির শাখায় একযোগে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়; অপহরণ করা হয় ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে।
ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আমরা হঠাৎ করে শুনলাম বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির প্রচেষ্টা হয়েছে। আমাদের কাছে যা তথ্য এসেছে কুকি-চিন; এই গ্রুপটি আগেও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। র্যাব ও আর্মি সেই ঘাঁটি সরিয়ে দিয়েছিল।“
“ইদানীং আমরা দেখছিলাম, এই কুকি-চিন আবার বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছিল। রুমার ঘটনায় এ পর্যন্ত আমরা যা শুনেছি, সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে তারা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বন্ধ করে। তারপর তারা সোনালী ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হয়।”
ঘটনার যে তথ্য হাতে এসেছে, তা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং অধিকাংশই তারাবির নামাজে ছিলেন। ওই সময় তারা ঢোকে। পুলিশের গার্ড কমান্ডার এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) মামুনুর রহমান ও কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলামকে আহত করে দুটি এসএমজি ও আটটি চাইনিজ রাইফেল লুট করে। উপজেলা কমপ্লেক্সে আনসার বাহিনী যারা ছিল, তাদের শটগানও তারা লুট করে নিয়ে নেয়।“
তিনি বলেন, “আমাদের সোনালী ব্যাংকের ভল্ট একটা ভাঙে, আরেকটি বোধ হয় ভাঙতে পারেনি। এগুলো আমাদের আনুষ্ঠানিক তথ্য নয়। আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি সেটা আপনাদের জানলাম। তবে কত টাকা নিয়ে গেছে সেই তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে আসেনি।“
বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা ও লুটের ১৬ ঘণ্টার মাথায় বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি হয়। এ ঘটনার পেছনেও কেএনএফ জড়িত বলে পুলিশের ধারণা।
থানচির ঘটনার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আজকে দিনের বেলায় আমরা আবার দেখলাম, থানচিতে তারা সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে অ্যাটাক করেছেন। এই অপারেশনটা এখনো চলছে। আমাদের বিজিবি-পুলিশ সেখানে গুলি করছে। এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারব না যে কত টাকা নিয়েছে বা ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে। পুরো তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে আসেনি।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের পর্যাপ্ত ফোর্স সেখানে আছে। যা কিছু করার দরকার সেখান করা হচ্ছে।”
( খবর বিডিনিউজ’র)