বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান
স্বাধীন দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোনো অবৈধ অস্ত্রধারীদের থাকতে দেয়া হবে না। আমরা অভিযান শুরু করেছি, পর্যায়ক্রমে অভিযানের মাত্রা বাড়তে থাকবে। সরকার শান্তি চাই, অশান্তি চাই না। তাই কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের শান্তির পথে ফেরার পথ আজও খোলা আছে, ভুল স্বীকার করে শান্তির পথে ফিরলে তাদের পুনর্বাসনসহ সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।
আজ বুধবার বিকালে সাড়ে তিনটায় বান্দরবানের রুমা-থানচিতে কেএনএফের তান্ডব এলাকা পরিদর্শন শেষে বান্দরবানের সার্কিট হাউজে প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন এসব কথা বলেন।
এদিকে র্যাবের প্রধান সকালে হেলিকপ্টারে রুমায় পৌঁছান। সেখানে রুমা সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদ-উপজেলা কমপ্লেক্সে হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুটের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে বান্দরবান পৌঁছানোর পর বান্দরবান সার্কিট হাউজে দুপুরে আড়াইটার জেলার বিভিন্ন সরকারি বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধধার বৈঠকে অংশ নেয়।
এসময় অন্যান্যদের বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) কর্নেল মো. মাহাবুব আলম, বিজিবি বান্দরবান সেক্টর সদর দপ্তরের কর্নেল সোহেল আহমেদ, বান্দরবান ডিজিএফআইয়ের কর্নেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ জামশেদ, র্যাবের পরিচালক এয়ার উইং লে. কর্নেল মীর আসাদুল আলম, র্যাবের পরিচালক(প্রশাসন ও অর্থ উইং) কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত, র্যাবের পরিচালক(ইন্টেলিজেন্স উইং) লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, কক্সবাজারের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১৫অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের বিগ্রেড মেজর হাসনাত ফেরদৌস, বান্দরবান এএসইউ এর লে. কর্নেল মো. ফয়সাল ফাহাদ, বান্দরবান পুলিশ সুপার, সৈকত শাহিন, বান্দরবান এনএসআই উপপরিচালক তৌহিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন আরও বলেন, বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো খুবই নিন্দনিয় কাজ। স্বাধীন দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে অবৈধ অস্ত্রধারী কোনো সংগঠনের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এনিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযানের সুনিদিষ্ট কিছু কর্মপরিকল্পনা রয়েছে, পরিকল্পনা অনুসারে এগুচ্ছে যৌথবাহিনী। অভিযানের স্বার্থে কিছু বিধিনিষেধও মানতে হচ্ছে সাধারণ জনগণের, তবে এটি সাময়িক। দেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সন্ত্রাস বিরোধী কাজ করছে যৌথবাহিনী। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টার্গেট কেএনএফ’র সশস্ত্র হামলাকারীরা, তাদের ধরতেই যৌথ বাহিনীর এই অভিযান। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যে অভিযানে অনেককেই আটক করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তাদের অপরাধী বানানোর জন্য নয়, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ছেড়েও দেয়া হচ্ছে। পাহাড়ে বম জনগোষ্ঠীর সকলেই কেএনএফ’র সঙ্গে জড়িত নয়, মুষ্টিমেয় বিপদগামী কেএনএফ’র সশস্ত্র সদস্য। বিপদগামীরা যতদিন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না আসে অথবা কেএনএফ’র সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে পাহাড়ে সন্ত্রাস বিরোধী। তবে কেএনএফ’র বম জনগোষ্ঠীর বিপদগামী সদস্যদের ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছি। তাদের আলোচনার জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি রয়েছে, তাদের সঙ্গে অথবা জেলা প্রশাসক, পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই,আনসার ও র্যাব সদস্যরা রয়েছে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে শান্তির পথে ফিরে আসতে পারে। শান্তি আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি, এখনো খোলা আছে। সংঘাত কারোরই কাম্য নয়। পরিশেষে বিপদগামী সকলের শুভবুদ্ধি উদয় হোক, ভুল বুঝতে পেরে অস্ত্র ছেড়ে ফিরে আসুক শান্তির পথে এটাই সরকারের প্রত্যাশা।