সাইফুল হাসান ও মিশু মল্লিক
রাঙামাটি সদরের পুরান পাড়া এলাকার বাসিন্দা শাবানা বেগম। স্বামী দিনমজুর এবং তিনি গৃহিণী। গত কয়েকমাস আগে তার বাসায় বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দিয়ে আসে। প্রিপেইড মিটার লাগানোর পর তার বকেয়া ইউনিটের কারণে ১১শ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে এবং তার পরের মাসেই বিদ্যুৎ বিল আসে ৬৪ হাজার টাকা। এভাবেই শহরের পুরান পাড়া, জালিয়া পাড়া, ইসলামপুর এলাকার শতাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক শিকার হয়েছেন হাজার হাজার টাকার ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের।
রবিবার সকালে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগে শহরের রিজার্ভ বাজার, পুরান পাড়া, শরিয়তপুর এলাকার গ্রাহকরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে এসে জড়ো হয়ে অভিযোগ করেন।
পুরান পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, আমি পেশায় একজন ইমাম। আমি বেতন পাই ৭ হাজার টাকা। আমি প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল প্রতিমাসে পরিশোধ করে ফেলি। কিন্তু প্রিপেইড মিটার বসানোর পরে আমাকে ৯হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দেয়া হলো। এতগুলো বিল আমি কিভাবে পরিশোধ করবো?
আরেক ভুক্তভোগী নতুন জালিয়া পাড়া এলাকার মিনাকী রানী দাস বলেন, প্রিপেইড মিটার বসানোর পর থেকে প্রতি মাসে ২হাজার টাকা রিচার্জ করেও কুলাতে পারছি না। টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তার উপর আগের ব্যবহৃত ইউনিট বকেয়া আছে জানিয়ে ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয়েছে আমাকে। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। এত টাকা কোথা থেকে দিব?
রাঙামাটি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার এলাকার অনেকের নাকি অতিরিক্ত বিল দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী আমাকে জাননানোর পর আমি ওদেরসহ বিদ্যুৎ অফিসে আসলাম। এখানকার দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা রিজার্ভ বাজার এলাকায় ৪ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার লাগিয়েছি। যারা প্রিপেইড মিটার পেয়েছে তাদের পুরাতন মিটারে কিছু ইউনিট বকেয়া থাকার কারণে ওগুলোর বিদ্যুৎ বিল এসেছে। যারা অভিযোগ করেছেন অতিরিক্ত বিলের, তারা যদি আবেদন করে তাহলে আমরা বিলগুলো কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ দিব। অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, মিটার রিডারদের ভুলের কারণে এমনটা হতে পারে। আমরা সেগুলো দেখছি।