জিয়াউল জিয়া।
কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় দেড় মাস পর ভেসে উঠেছে ডুবে থাকা ঝুলন্ত সেতুটি। অবশেষে ৪৫ দিন পর সিম্বল অব রাঙামাটি পর্যটন ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন থেকে পানি কমে গেছে। এতে সেতুটি এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে এবং পর্যটকরাও দীর্ঘ সময় পর সেতুতে স্বাভাবিকভাবেই হাঁটাচলা করতে পারছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঝুলন্ত সেতু এলাকা পরিদর্শনে এমন চিত্র চোখে পড়ে। উজান থেকে নেমে আসা পানি বাড়ায় রাঙামাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনা ঝুলন্ত সেতুটি দীর্ঘ প্রায় ৪৫ দিন ধরে ডুবে ছিলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফলে কমতে শুরু করেছে কাপ্তাই হ্রদে পানি। এতে প্রায় ৪৫ দিন পর জেগে উঠছে রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতু। বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় এতদিন সেতুটি পানিতে ডুবে ছিল। ইতোমধ্যে পানি সরে যাওয়ায় সেতু পরিষ্কার এবং রংয়ের কাজ করছে পর্যটক করপোরেশন।
সেতুটি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা হাতাশা প্রকাশ করেন। এতে আবারও ক্ষতির মুখে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সেতুতে পানি থাকায় রাঙামাটিতে পর্যটকের সংখ্যা কিছু কমেছে বলে জানান করপোরেশনের ব্যবস্থাপক। একই সাথে তাদের আয়ও অনেকাংশে কমেছে।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা ফারিয়া আক্তার ও মো. সোহেল বলেন, রাঙামাটি আসার পর শুনেছিলাম ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে গেছে। তাও দেখতে এসছিলাম। এসে দেখি ভেসে উঠেছে। যাক অবশেষে হাঁটতে পেরেছি ঝুলন্ত সেতুতে।
ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, রাঙামাটি যারাই বেড়াতে আসেন তাদের প্রথম আকর্ষণ থাকে ঝুলন্ত সেতু দেখতে আসা। সেতু ডুবে যাওয়ার একদম পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে। যেহেতু হ্রদের পানি কমেছে। আশা করছি আবারও পর্যটক আসবে রাঙামাটিতে। আমাদের দীর্ঘ ৪৫ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে আসায় ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতু। কিছু সংস্কার কাজ চলছে। সেতুতে পর্যটক চলাচলে যে নিষেধাজ্ঞা ছিলো তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেতু ডুবে থাকায় রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি পর্যটক আসলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে থাকায় গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সেতুটি দিয়ে পর্যটকদের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। ১৯৮৬ সালে রাঙামাটি জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ নয়নাভিরাম সেতুটি নির্মাণ করে। দুই পাহাড়ের মাঝখানে দুটি পিলারের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি পর্যটন শহর রাঙামাটির প্রতীক হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি রয়েছে।