শহীদ মংশে মারমার ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে স্মরণসভা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) মানিকছড়ি উপজেলা শাখা। রবিবার সকাল ১০টায় এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণসভার পূর্বে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ মংশে মারমার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে জিরান চাকমা ও ক্যহ্লাচিং মারমা এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পক্ষ থেকে অনিমেষ চাকমা ও ক্যামেরণ দেওয়ান।
আয়োজিত স্মরণসভায় পিসিপির মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অংসালা মারমার সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক আতুশে মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক জিরান চাকমা ও ক্যহ্লাচিং মারমা, পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অংচাই রোয়াজা, ও এলাকার মুরুব্বী বাবু মারমা। এছাড়া মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ সংগঠক দেবেশ চাকমা, সাবেক মেম্বার সুদুঅং মারমা ও এলাকার মুরুব্বী ম্রাসাজাই মারমা।
স্মরণসভা শুরুতে শহীদ মংশে মারমাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সকল শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জেএসএস’র খুন-গুম-অপহরণের রাজনীতির বলি শহীদ মংশে মারমাও একজন। ১৯৯৯ সালের ৩ ডিসেম্বর মানিকছড়ির কালাপানি এলাকায় সাংগঠনিক কাজে গেলে জেএসএস’র সন্ত্রাসীরা মংশে মারমাকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘটনার কয়েকদিন পর তার লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। জেএসএস’র এই খুনের রাজনীতি এখনো চলমান রয়েছে।
তারা আরো বলেন, শহীদ মংশে মারমা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। তিনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে একজন একনিষ্ট কর্মী ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। যার কারণে জেএসএস সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে।
বক্তারা বলেন, শুধু মংশে মারমা নয়, ইউপিডিএফ গঠনের পর থেকে এ যাবত জেএসএস কর্তৃক অন্তত আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মী, সমর্থক খুন-গুমের শিকার হয়েছেন। তারা বলেন, একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা যায় কিন্তু তার আদর্শ, চেতনাকে কখনো হত্যা করা যায় না। যারা জনগণের জন্য জীবন দেন তারা অমর হয়ে থাকেন। তাদের কোন মৃত্যু হয় না। শহীদ মংশে মারমাও পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।
বক্তারা শহীদ মংশে মারমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার লালিত চেতনা ধারণ করে পিসিপি’র নেতা-কর্মীসহ ছাত্র-যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান।(বিজ্ঞপ্তি)