মিশু মল্লিক ॥
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু প্রজনন, বংশবৃদ্ধি, মজুদ ও হ্রদের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন মাসের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত মোট তিন মাস দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ আহরণ, বাজারজাত ও পরিবহনের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর তিনমাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। গত ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সূত্র জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে কার্প প্রজাতির মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করার জন্য ডিম ছাড়ার মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখা প্রয়োজন। কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান। এ সময় মাছ শিকার বন্ধে কাপ্তাই হ্রদে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। স্থানীয় বরফ কলগুলোও এসময় বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত যেসকল মাছ আহরণ করা হবে তা পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পরিবহন সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় শুকানো মাছও বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অবশ্যই পরিবহন শেষ করতে হবে। মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালীন জেলেদের ২০ কেজি হারে ভিডিএফ চাল বিতরণ করা হবে। রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলা মিলে সরকারি তালিকাভুক্ত প্রায় ২৬ হাজার ৮৬৬ জন জেলে রয়েছেন বলে তিনি জানান।
কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানিয়েছেন, কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক নিশ্চিতকরণে মধ্যরাত থেকে আগামী তিনমাস কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মাছ শিকার বন্ধে নৌ পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান টিম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। নিষিদ্ধকালীন রাঙামাটি জেলার সীমানার মধ্যে সকল বরফকল বন্ধ থাকবে। এসময় কেউ হ্রদে মৎস্য আহরণ করলে অপরাধ অনুযায়ী তাকে দন্ড দেয়া হবে।