নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে এইট মার্ডার হত্যায় নিহতদের লাশ গ্রহণ করতে আসেনি পরিবার। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ জনগোষ্ঠীর বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। শনিবার দুপুরে পৌনে তিনটায় ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী খামতাং পাড়া এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সাথে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এর মধ্যে গোলাগুলিতে ৮ জন নিহত হয়। নিহতদের ময়নাতদন্তের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে পরিবারের স্বজনরা লাশ গ্রহণ করতে না আসায় বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি লালজার বম লাশগুলো গ্রহণ করে ধর্মীয় রীতি অনুসারে দাফনের জন্য নিয়ে যান। নিহতরা হলেন- ভানদু বম (৩৫), সাংখুম বম (৪৫), সানফির থাং বম (২২), বয়ে রেম বম (১৭), জাহিম বম (৪০), লাল লিয়ান নাং বম (৪৪) এবং লালঠা জার বম (২৭)। অপরজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে বম জনগোষ্ঠীর আট সদস্যকে হত্যার ঘটনায় রোয়াংছড়ি, রুমা এবং থানচি তিনটি উপজেলায় সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)। ঘোষণা না মানলে চলন্ত গাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করার হুমকিও দিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের পর লাশগুলো স্বজনরা উপস্থিত না থাকায় বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে সন্ত্রাসীদের হুমকির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে সশস্ত্র দুটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পাহাড়ে। আতঙ্ক কাটেনি রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। ভয়ে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে খামতাং পাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড় শতাধিক পরিবার। তাদের মধ্যে রোয়াংছড়ি সদরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ৯০টি পরিবারের ১৭৮ জন। অন্যদিকে রুমায় আশ্রয় নিয়েছে ৬০টি পরিবারের নারী,পুরুষ ও শিশু। আশ্রয় গ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সাথে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এর মধ্যে গোলাগুলিতে আটজনের লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।