শুভ্র মিশু
রাঙামাটিতে অতিবৃষ্টিতে শহরের রাঙাপানি এলাকায় যুব উন্নয়ন সংলগ্ন রাস্তার পাশের মাটি ধসে বৈদ্যতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সকাল থেকে ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীনছিল রাঙামাটি শহরের বিস্তির্ণ এলাকা। রিজার্ভ বাজার, তবলছড়িসহ আশপাশের এলাকার অন্তত ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ না থাকায় কষ্ট পেয়েছেন এই সময়ে। জেলা শহর ছাড়াও বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, সদরের সাপছড়ি, রাজস্থলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে।
টানা কয়েকদিনের অতিবর্ষণে রবিবার সকাল দশটার দিকে রাঙাপানি এলাকায় রাস্তার পাশের মাটি ধসে যায়। এতে ৩৩হাজার লাইনের একটি বৈদ্যতিক খুঁটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে খুঁটিটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। লাইনটি মেরামত করতে সকাল ১১টার দিকে শহরের মাঝের বস্তি সাব স্টেশনের সকল লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার পর থেকে শহরের রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, মাঝেরবস্তি, রিজার্ভমূখ, পুরানবস্তীসহ আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এতে বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তিতে পরেছে অন্তত ২০হাজার মানুষ। দুপুর তিনটার দিকে বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, সকালে রাঙাপানি এলাকায় একটি সড়কের পাশের মাটি ধস হলে ৩৩হাজার লাইনের একটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। লাইনটি মেরামত করতে সকাল ১১টা থেকে মাঝেরবস্তী সাবস্টেশন থেকে সকল বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। লাইনটি সচল করতে দুপুর আড়াইটার পর হতে পারে।
এছাড়াও অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির সাপছড়ি ইউনিয়নে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের উপর পাহাড় ধস, নানিয়াচর বুড়িঘাট সড়কের কিছু অংশে ধস, বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিস্য দীঘিনালা সড়কের ৪মাইল এলাকায় সড়কের উপর পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে।
রাঙামাটিতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে দফায় দফায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঝূঁকিতে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে প্রশাসনের আহবানে আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও কিছু সময় পরে আবারো বাসায় চলে আসছে। ঝূঁকিতে থাকা বসবাস করা মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রচারণা ও অভিযান অব্যহত রেখেছে জেলা প্রশাসন।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি ক্যালেক্টর মুহাম্মদ ইনামুল হাছান জানান, ঝূঁকিতে বসবাস করাদের নিরাপদে নিতে আমরা কার্যক্রম অব্যহত রেখেছি। যাতে অতিবর্ষনের কারণে কোন যানমালের ক্ষতি না হয়। বর্তমানে অতিঝূঁকিতে থাকা শিমুলতলীসহ আশপাশের এলাকার ২শতাধিক মানুষকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি।
উল্লেখ্য: জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে শহরের ৩১টি পয়ন্টে, ৪হাজার পরিবারের প্রায় পনের হাজার লোক পাহাড়ের পাদদেশে ঝূঁকিতে বসবাস করছে। স্থানীয়দের তথ্য মতে ২০১৭সালের পরে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে অন্তত পাঁচশত নতুন ঘর তৈরি করা হয়েছে।