সাগর চক্রবর্তী কমল, মাটিরাঙ্গা ॥
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় শ্যামা পূজা দেখতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী (১৫)। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বোন বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছে। সোমবার রাত আনুমানিক ১১ টায় মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রামগড় সীমান্ত সড়কের ধলিয়া ব্রিজের উত্তর পাশে একটি সেগুন বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রনি বিকাশ ত্রিপুরা (৩২) ও ডেটল বাবু ত্রিপুরা (১৭) নামে দুই ধর্ষণকারীকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করে করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিমুন ত্রিপুরা (২২) নামে আরেক আসামিকে আটক করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অপর একজন পলাতক রয়েছে। আটককৃত রনি বিকাশ ত্রিপুরা বেলছড়ি ইউনিয়নের চোংরাকাপা গ্রামের অরুণ বিকাশ রোয়াজার ছেলে, ডেটল বাবু ত্রিপুরা গোমতী ইউনিয়নের বান্দরছড়া গ্রামের অনিরঞ্জন ত্রিপুরার ছেলে ও বিমুন ত্রিপুরা গোমতী ইউনিয়নের বান্দরছড়া গ্রামের হেয়াসা ত্রিপুরার ছেলে।
পুলিশ, স্থানীয়, ভুক্তভোগীর পরিবার ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ির থেকে মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ায় মাসিতো বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী (১৫)। ওইদিন রাতে স্বজনদের সাথে বেলছড়ি ইউনিয়নের অযোধ্যা কালী মন্দিরে শ্যামা পূজা দেখতে যায়। এ সময় ধর্ষণকারীরা সংঘবদ্ধভাবে তার পিছু নেয়। এক পর্যায়ে ধর্ষণকারীরা তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মোটরসাইকেল যোগে মন্দির হতে কিছুটা দূরে মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রামগড় সীমান্ত সড়কের ধলিয়া ব্রিজের উত্তর পাশে একটি সেগুন বাগানে নিয়ে যায়।
জনশূন্য বাগানে রনি বিকাশ ত্রিপুরা ও সুমন বিকাশ ত্রিপুরা ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। অপর আসামিররাও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পালাক্রমে ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জঙ্গলে ফেলে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় তার মাসি এবং মাসিতো বোন জামাই তাকে খুঁজে না পেয়ে মন্দির কমিটির সহায়তায় একদিন পর মঙ্গলবার রাত ১টার সময় রামগড় সীমান্ত সড়কের ধলীয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।
ঘটনাটি জানাজানির পর বুধবার দুপুরের দিকে সামাজিক বিচারের জন্য ডাকলে ধর্ষণকারী রনি বিকাশ ত্রিপুরা ও ডেটল বাবু ত্রিপুরা উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দিলে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ ওই দুইজনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার বিমুন ত্রিপুরা নামে আরেক আসামিকে আটক করেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষিতার বড় বোন বাদি হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে স্থানীয়দের সহায়তা তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্য একজনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তিনি আরো বলেন আটককৃত তিন আসামিকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

