মানব ও প্রকৃতি সৃষ্ট সকল দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রাঙামাটি জেলা ইউনিটের আয়োজনে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক মো. আব্দুল হালিম, মহাসচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন, রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম শফি কামাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙামাটি জেলা ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান হাজী কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা দাউদ হোসেন চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মাহফুজ প্রমুখ।
বৈঠকে প্রধান অতিথি বৃষ কেতু চাকমা বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট বিশে^র কাছে এখন রোল মডেল। দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় শান্তি বিরাজ করার জন্য রেড ক্রিসেন্ট সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সকল ধরনের দুর্যোগপূর্ণ সময়ে রেড ক্রিসেন্টের পাশাপাশি সকল সেক্টরের জনগণকে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বৃষ কেতু বলেন, বিভিন্ন দুর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে রেড ক্রিসেন্টের যুব স্বেচ্ছাসেবকেরা। এর প্রতিফলন ২০১৭ সালে রাঙামাটিতে ভূমিধসে দেখতে পাই। রাঙামাটিতে ২০১৭ সালের ভূমিধসের সেই ভয়াল দিন এখনো অনেককে কাঁদায়। ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু যেন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে রেড ক্রিসেন্ট, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্তদের সেবায় এগিয়ে এসেছিলো বলেই ক্ষতিগ্রস্তরা উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। তাই জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রেড ক্রিসেন্টের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহৃত রাখতে হবে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে জেলায় ব্ল্যাড ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে সভায় উল্লেখ করেন। মানব প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার কাজের যুব রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকদের পড়ালেখার পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনকে আরও জাগ্রত করার আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।
বৈঠকে উন্মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত বক্তরা বলেন, জেলার দুর্গম ও প্রান্তিক এলাকার মানুষ এখনো অসচেতন। প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা ও পূর্ব এবং পরবর্তী প্রস্তুতির বিষয়ে তারা অজ্ঞ। এ ধরনের সভা সেমিনার শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলে করা গেলে মানুষ অনেকটা সচেতন হবে। বক্তারা বলেন, পার্বত্য এ জেলার বেশিরভাগ উপজেলায় নদী কেন্দ্রিক, তাই যোগাযোগ বা দুর্যোগে যাওয়া আসার জন্য রেড ক্রিসেন্টের যানবাহনের কোনো ব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্টের নেই কোনো নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা। প্রধান কার্যারয় থেকে এ যানবাহনগুলো প্রদান করা হলে রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমগুলো আরও গতিশীল হবে।
অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।