নিজস্ব প্রতিবেদক,মানিকছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের অনুন্নত আচালং পাড়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ১৫টি পরিবারে নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করতে সম্প্রতি নির্মিত হয় আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর। এসব ঘরে আশ্রিতদের প্রকৃত অবস্থা যাচাই বাছাই ও নির্মিত ঘর পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী।
সোমবার দুপুর ১২টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) মো. তহিদ উজ জামান। এ সময় আচালং পাড়া প্রধান(কার্বারি) অসীন চন্দ্র ত্রিপুরা জানান, আশ্রয়ন প্রকল্পে আমিও আমার স্ত্রীর নামে একটি ঘর পাই। কিন্তু পরক্ষণে দেখি যে, বয়োবৃদ্ধ পূর্ণ ত্রিপুরা(৬০) একটি ঝুপড়ি ঘরে মানবেতরভাবে রাত্রিযাপন করছে। এই দৃশ্য দেখে আমি মর্মাহত হয়ে আমাদের প্রাপ্ত ঘরটি ওই বয়োঃবৃদ্ধ দুঃখীকে দিয়ে দেই।
একজন পাড়া প্রধান অসহায় হওয়া সত্ত্বেও একজন বয়োবৃদ্ধ দুঃখ অনুভব করে নিজের বরাদ্দকৃত ঘর বিবেকের তাড়নায় হত-দরিদ্রকে দিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, উপজেলার দুর্গম এই আচালং পাড়ায় আমরা কিছু উপকার ভোগী যাচাই করতে এসে অসিন চন্দ্র ত্রিপুরার(কার্বারী) দুরবস্থা দেখে তাকে একটি ঘর দেই। কিন্তু একই এলাকায় পূর্ণ ত্রিপুরা নামক একজন বয়োবৃদ্ধ যখন একটি ভাঙ্গা ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করে এমন দৃশ্য দেখে স্বয়ং অসিন চন্দ্র ত্রিপুরা নিজে স্বেচ্ছায় পূর্ণ ত্রিপুরাকে দিয়ে দিলেন। আসলে এযুগে দুর্গম পাহাড়েও ভালো মনের মানুষ আছে, সাদা মনের মানুষ আছে। নিজের পাওয়া ঘর, দরিদ্র আরেক জনকে দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত রেখেছেন অসিন চন্দ্র ত্রিপুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যোগ্যছোলা ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন, ১নং ওয়ার্ডে মেম্বার সুমন্ত চাকমা, নব নির্বাচিত মেম্বার কছম রাই ত্রিপুরা, ২৩২নং কালাপানি মৌজা প্রধান বা হেডম্যান সাথোয়াই চৌধুরীসহ এলাকার কার্বারিগণ।