নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকছড়ি ॥
আচাইমং মারমা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার অনগ্রসর ও অবহেলিত আচালংপাড়ার একজন পাড়াপ্রধান বা কার্বারি। তিনি হত-দরিদ্র ও ভূমিহীন। সরকারি খাস জায়গায় নড়বড়ে কুঁড়ে ঘর স্ত্রী, সন্তানাদি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনের পাশাপাশি পাড়াপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এলাকায় তাঁর মতো আরও অনেক ভূমিহীন পরিবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পেয়ে আবেগে আবেগাপ্লুত! বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আজাইমং মারমা বলেন, ১০০০ ইট দিয়েও জীবনে কোন ঘর করার স্বপ্ন কখনও দেখেনি ! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আশ্রয়ণে ঘর দিয়ে পাকা ঘরে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছেন! পাকা ঘরে রাত্রিযাপনের এমন অকল্পনীয় স্বপ্ন বাস্তবে রুপ পেয়েছেন উপজেলার ১০৬২ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।
বুধবার সারাদেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪র্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২২ হাজার ১০১টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারে হস্তান্তর কার্যক্রম ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় ১৪০টি ঘরের চাবি ও দলিলপত্রাদি হস্তান্তর করা হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও)মো. তহিদ উজ জামানের স্বাগত বক্তব্যে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) রক্তিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন।
বক্তব্য রাখেন, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ.জব্বার,, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ফারুক, সুবিধাভোগী রিজিয়া আক্তার ও আচাইমং মারমা। উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক সকল কর্মকর্তা, সুবিধাভোগীদের উপস্থিতিতে উপজেলা মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনে সভাপতির বক্তব্যে সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণনয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারে বাছাই এবং পাহাড়ি জনপদের তৃণমূলে ঘর তৈরির গল্প অনেক। এই এলাকার ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলো এক টুকরো ভূমি ও গৃহ পেয়ে আজ তারা আবেগাপ্লুত। আশ্রয়ণে ঠাঁই পাওয়া সকল নাগরিককে সরকারী সকল সুযোগ, সুবিধা নিশ্চিত করার কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে মেরুং ও কবাখালি এলাকার কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে আশ্রিতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে দীঘিনালা সেনা জোনের পক্ষ থেকে। ত্রাণ বিতরণ করেন জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর নুর নাফিজ ইসলাম, ওএসপি, পিএসসি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমান, মেরুং ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকি এবং কবাখালি ইউপি চেয়ারম্যান নলেজ চাকমা জ্ঞান।