শামীমা আক্তার
‘মা’
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনি ভালো আছেন। মা, আজ ২৫ বছর বয়সে এসে এই প্রথম তোমাকে চিঠি লিখতে বসলাম। মা, তুমি জানো? তোমার এই ডাক নাম ¯্রষ্টার অকৃত্রিম, নির্ভেজাল একটি নাম। মা, আমাকে নিয়ে আপনার মনে অনেক অভিযোগ, তাই না? যে ঘরটা ভরপুর ছিল আজ আপনার কাছে সেই ঘরটা শূন্য শূন্য লাগে। মা, এটাই তো নিয়তি। মা, আপনি কি জানেন আমার অনেক অজানা কষ্টের কথা রয়েছে? কীভাবে জানবেন, আমি তো কোনওদিন বলিনি। মা, জানেন আমি কালো, গরিব আর আমার বিয়ে হচ্ছে না দেখে, সমাজ আমাজে অবহেলার চোখে দেখে। মা, দিনশেষে আমার অনেক কষ্ট হয়, মৃত্যুর মতো ছটফট করি। তাই মা আজ লেখাপড়ার সূত্রে আমি বাইরে থাকি।
মা, সবার মতো ছুটিতে আমারও বাড়ি যেতে খুব আনন্দ লাগে। কিন্তু ‘মা’ এখন তো আমার পঁচিশ বছর। গ্রামের মহিলাদের কথা মনে পড়লে আমার কলিজা শুকিয়ে যায়। ‘মা’ আমার বাড়ি যেতে ভয় হয়! আমি যে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে গেছি। জানি মা; তুমি আমার বিয়ে নিয়ে খুব ভেঙ্গে পড়েছো। মৃত্যুর আগে আমাকে বিয়ে দিতে চাও। মা, কষ্ট পেও না। কালো বলে আমার বিয়ে হবে না-এমন চিন্তায় না? বিয়ে তো আল্লাহর হাতে মা। আচ্ছা মা আমি কি সত্যিই অসুন্দর? মা, অসুন্দর শব্দটি শুনতে আমার খুব কষ্ট হয়। মা, একবার বলো না, আমি তোমার রাজকন্যা, এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী। মা, তুমি কি জানো, আমার মতো মেয়েরা কেন আত্মহত্যা করে? আমার গ্রামের মতো মহিলাদের কটু কথায়।
মা, আজ আর নয়। আপনার শরীরের যতœ নিও। বাবাকে আমার সালাম জানাবেন।