অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা অনিল মারমা অনেকটা শখের বসে পরীক্ষামুলক মাশরুম চাষ শুরু করে ভালোই সফলতা পেয়েছেন। এবং বর্তমানে তিনি মাসরুম চাষ করে স্বাবলম্বীও হয়েছেন। কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়িস্থ নিজ বাড়িতে তিনি মাশরুম চাষ শুরু করেন প্রায় তিন বছর পূর্বে। বিশেষ করে অবসর সময়টি তিনি মাশরুম চাষের পরিকল্পনা করেই কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে সফলতা পাওয়ায় তিনি বর্তমানে প্রতিনিয়ত মাশরুম চাষের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। মাশরুম চাষের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতীদের মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ এবং দিক-নির্দেশনাও দিয়ে থাকেন।
এবিষয়ে মাশরুম চাষী অনিল মারমার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমানে তিনি এলএলবি সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু লেখাপড়ার পাশাপাশি মাশরুম চাষে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে তাঁর। তিনি একপ্রকার পরীক্ষামুলক মাশরুম চাষ শুরু করলেও বর্তমানে ভালোই সফলতা পেয়েছেন বলে জানান। বিশেষ করে সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের মাগুরা জেলার ড্রিম মাশরুম সেন্টার থেকে মাশরুষ চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। যেখানে মাশরুম চাষের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক বাবুল আক্তার এর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বর্তমানে কাপ্তাই বড়ইছড়িস্থ বাড়ির পাশে একটি শেড বানিয়ে মাশরুম চাষ করে যাচ্ছেন। এবং এই ১টি চাষঘরে কমপক্ষে ১ হাজার মাশরুম চাষের খড়ের সিলিন্ডার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন রয়েছে বলে অনিল মারমা জানান।
এছাড়া তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে স্বল্প পরিসরে মাশরুম চাষ করলেও গত চার মাসে ৪ শত খড়ের সিলিন্ডার হতে মাশরুম উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩ শত কেজি। এদিকে উৎপাদিত এই মাশরুম রাঙামাটি জেলা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাইকারীভাবে বিক্রয় করেছেন তিনি। যেখানে তিনি প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় ও করে ফেলেছেন। পাশাপাশি তিনি যদি সারা বছর ১ হাজার খড়ের সিলিন্ডার তৈরি করে মাশরুম উৎপাদন করতে পারে তাহলে বছরে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব হবে বলে অনিল জানান। এছাড়া অনিল মারমাকে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করছে বলে তিনি জানান।
এদিকে অনিল মারমা কেবল মাশরুম চাষে সীমাবদ্ধ থাকেননি বরং মাশরুম চাষের পাশাপাশি তিনি ৩য় প্রজন্মের ধানের মাদার উৎপাদন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে বর্তমানে তার এলাকার বেকার যুব-মহিলা কাজ করার সুযোগ পাবে চাষ কারখানায়। অনিল মারমা মাশরুম চাষের উপর যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেছে তা হলো এই মাশরুম চাষের পরিসর বৃদ্ধি করে এলাকার বেকার কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মাশরুম চাষে ব্যাপক সফলতার মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করবেন বলে আশা করছেন।
এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইমরান আহামেদ জানান, বর্তমানে দেশে বিদেশে মাশরুম চাষ দিনদিন অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে। অনিল মারমার মতো যদি অন্যরাও এই মাশরুম চাষে কাজ শুরু করে, তবে অনেকেই এতে স্বাবলম্বী হতে পারবে। কেননা মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং অনান্য কিছুর তুলনায় মাশরুমের কদরটা অনেক বেশি। এছাড়া অনিল মারমাকে মাশরুম চাষে কৃষি বিভাগ সহযোগীতা করে যাচ্ছে। অনিল মারমার মাশরুম চাষের আরো সফলতা কামনা করেছেন তিনি।