মিন্টু মারমা, মানিকছড়ি
একটি বেসরকারি ব্যাংকের আউটলেট এজেন্ট থেকে শাখায় মূল শাখা ফেরার পথে ভাড়া করা অটোরিকশায় একটি টাকাভর্তি ব্যাগ ভুলে ফেলে রেখে চলে যান এক ব্যাংক কর্মকর্তা যাত্রী। তাঁকে নামানোর কিছুক্ষণ পর অটোরিকশাচালক হঠাৎ যাত্রীর আসনের পেছনে পড়ে থাকা ব্যাগটি খেয়াল করেন। এ সময় তিনি ব্যাগটি খুলে দেখেন, ভেতরে সব টাকার বান্ডিল। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে যাত্রীকে তাঁর ফেলে যাওয়া ১ লাখ টাকার চেক ও নগদ ৬ লাখ টাকা ভর্তি ব্যাগটি ফেরত দিয়েছেন ওই অটোরিকশা চালক।
সোমবার খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। টাকা ও চেক ফেরত দেওয়া ওই অটোরিকশাচালকের নাম মেহেদী হাসান শান্ত। তিনি উপজেলার তিনটহরী পূর্বপাড়ার বাসিন্দা। এঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। মঙ্গলবার উপজেলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একতা যুব সংঘের পক্ষ থেকে ঐ অটোরিকশা চালকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অটোরিকশাচালক মেহেদী হাসান শান্ত বলেন, ‘বিকেল ৩টার দিকে মানিকছড়ি বাজার থেকে এক যাত্রী তাঁর গাড়িতে ওঠেন। মহামুনি বাসস্ট্যান্ডে ওই যাত্রীকে নামিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পর ব্যাগটি তাঁর চোখে পড়ে। তিনি বুঝতে পারেন, মহামুনি স্টেশনে নেমে যাওয়া যাত্রী বাকি সব জিনিস নিলেও ব্যাগটি ফেলে গেছেন। এ সময় কৌতূহলবশত ব্যাগটি খুললে টাকাগুলো দেখতে পান তিনি। এরপরপরই ব্যাগের মালিকের মানিকছড়ি বাজারে ছুটে যান। পরে ব্যাংকের শাখার অন্য এক কর্মকর্তার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে টাকাভর্তি ব্যাগটি ফেরত দেন শান্ত’। এঘটনা জানানজানির পর প্রশংসায় ভাসছেন অটোচালক শান্ত। তার এমন সততা ও মহানুভবতার কারণে তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন একতা যুব সংঘের নেতৃবৃন্দ।
একতা যুব সংঘের সভাপতি এসএম নাছির উদ্দিন বলেন, মেহেদী হাসান শান্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও ছেলেটি অত্যন্ত সৎ। তার সততা খুবই প্রশংসনীয়। তাঁর দৃষ্টান্ত অন্যদের জন্য অনুকরণীয় করার লক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও প্রবীণ শিক্ষক মো. আতিউল ইসলাম বলেন, যেখানে আমাদের সমাজের একশ্রেণির মানুষ অর্থলিপ্সায় নিমজ্জিত, সেখানে এই দরিদ্র অটোরিকশা চালকের সততা সত্যিই প্রশংসনীয় ও মহানুভবতার পরিচয় বহন করে। তাই সকল বিত্তবান মানুষদের উচিত শান্তর পাশে দাঁড়ানো এবং তার আর্থিক স্বচ্ছলতায় সহয়তা করা’।