মিল্টন চাকমা, মহালছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার কেরেঙ্গানালা কমিউনিটি ক্লিনিকের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা সেবা। ভবনের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। জানালার ওপরের অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। একতলা ছাদ বিশিষ্ট এ ভবনেই ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলছে চিকিৎসা সেবা। আর কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রোগীদের সেই কাক্সিক্ষত সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র দূরে হওয়াতে কেরেঙ্গানালা গ্রামসহ ৮/৯ টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা এই ক্লিনিকটি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি জরুরি ভিত্তিতে নতুন করে নির্মাণ করা দরকার বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ভবনটির ভগ্নদশা। ভবনের দেয়ালে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে। ছাদের নির্মাণ সামগ্রী ধসে পরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সব থেকে ভোগান্তিতে পড়েছে গর্ভবতী মেয়েরা। ভবনটি ধসে পড়ার ভয়ে অনেকেই ক্লিনিকে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
স্থানীয়দের মধ্যে বকুল চাকমা জানান, প্রতিদিন শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশুদের এই কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা দেয়া হয়। দ্রুত কেন্দ্রটি সংস্কার করা না হলে কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মহালছড়ি সদর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মানিক রঞ্জন চাকমা বলেন, মহালছড়ি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গ্রামগুলো দূরে হওয়াতে এই কেরেঙ্গানালা কমিউনিটি ক্লিনিকটি গ্রামবাসীদের একমাত্র চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র। গর্ভবতী মহিলাসহ এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ভবনটি দ্রুত সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন।
উক্ত ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার ডেফোডিল খীসা বলেন, কেরেঙ্গানালা গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী ৮/৯ টি গ্রাম থেকে প্রতিদিন শতাধিক নারী-পুরুষ চিকিৎসা সেবা নিতে কেন্দ্রটিতে আসেন। একদিকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে নির্দিষ্ট পরিমাণে কক্ষ না থাকাতে ওষুধপত্র ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ করা হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা দিতে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভবণ নির্মাণের দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন তিনি।
এই বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ধনিষ্ঠা চাকমা কেরেঙ্গানালা কমিউনিটি ক্লিনিকটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কেরেঙ্গানালা কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটি অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, তারপরও এলাকাবাসীর কথা ভেবে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমরা স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রেখেছি। এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।