শংকর হোড় ॥
মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের ধারাবাহিকতায় এবার চতুর্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে রাঙামাটিতে আরো ২১৩ পরিবারকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। আগামী বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘরের চাবি হস্তান্তরের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। সোমবার বিকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে চারটি পর্যায়ে রাঙামাটিতে ১৯১৬ পরিবারকে গৃহ ও জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাস্কফোর্স কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রাঙামাটি জেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা মোট ৪৫৩৪টি। এদের মধ্যে পরবর্তীতে আরো ২৪০৫ পরিবারকে গৃহ ও জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) এসএম ফেরদৌস ইসলাম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীবৃন্দ।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি গৃহ তৈরি বাবদ এক লাখ ৭১ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হলেও পরবর্তীতে সেটা কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। বর্তমানে যেসব ঘর প্রদান হচ্ছে সেসব ঘরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা হারে। এর আগে প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি ঘর তৈরি বাবদ এক লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ৭৩৬টি পরিবার, দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা করে ২৪৩টি পরিবার, দ্বিতীয় ধাপে দুই লাখ টাকা করে ২৬০ পরিবার, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা করে ২০০টি পরিবার, তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে দুই লাখ ৫৯ হাজার টাকা করে ৭৮টি পরিবার এবং চতুর্থ পর্যায়ের প্রথম ধাপে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা করে ৩৯৯টি পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, যাদেরকে ঘর দেওয়া হচ্ছে, তাদেরকে ভূমি নামজারি করে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ যার ঘর, জায়গাও তার।
জেলা প্রশাসক বলেন, আশ্রয়ন-২ এর অধীনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না’ এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে বিশ্বজুড়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। প্রতিটি পরিবারকে দুই রুমের সেমি পাকা টিনশেড বাড়িতে রান্নাঘর, টয়লেট, বারান্দাসহ নিরাপদ বাসস্থান দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা উন্নত জীবন-যাপন করতে পারে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহায়ণের সঙ্গে কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন, শিক্ষা, পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম যুক্ত হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ইতোমধ্যে রাঙামাটি জেলায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পসমূহে ১৫ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত কৃষিজ পণ্যের উৎপাদনের পরিমাণ ১২, ৬৬৬ কেজি, যার বাজারমূল্য ৫,৩৫,৮৫০ টাকা, পালনকৃত গরু/মহিষের সংখ্যা ৭২৯টি, ছাগল/ভেড়ার সংখ্যা ৬১৯টি, অন্যান্য গবাদি পশুর সংখ্যা ২২৮টিসহ গবাদি পশুর মোট সংখ্যা ১৫৭৬টি, যার বাজার মূল্য ২,৫৬,০০,৩০০টাকা, হাঁস/মুরগী/অন্যান্য পোল্ট্রি সংখ্যা আনুমানিক ৮৫৩টি, যার বাজারমূল্য ২৮,৯৭,৬৯০টাকা। উৎপাদিত মাছের আনুমানিক পরিমাণ ৫৮৫ কেজি, যার বাজার মূল্য ৭৩,৫০০ টাকা।