জিয়াউল জিয়া
পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকার হতদরিদ্র শিক্ষার্থীরা তাদের মেধার বিকাশ ঘটিয়ে যাতে নিজেদেরকে দেশের জন্য সম্পদে পরিণত করতে পারে, সেই লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিবছর শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করছে। এই অর্থ সামান্য হলেও তোমাদের পড়ালেখার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিতে উৎসাহ দিবে। আমরা চাই তোমরা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই শিক্ষাবৃত্তির অর্থ ও সংখ্যা আরো বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা রয়েছে। রোববার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাইনী সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাঙামাটি জেলার মেধাবী ৭৫৪ শিক্ষার্থীর মাঝে ৬৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত (অব) সুপ্রদীপ চাকমার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, বোর্ডের সদস্য প্রশাসন জসীম উদ্দীন।
এসময় দীপংকর তালুকদার আরও বলেন, সরকার শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় শিক্ষা আলো ছড়িয়ে দিতে উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, এই শহরে বড় অডিটরিয়াম সংকট রয়েছে। একসাথে দেড় হাজার মানুষ একসাথে বসতে পারে সেই ধরনের একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত (অব) সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য দুর্গম এলাকার প্রতিটি মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী যাতে ঝরে না পড়ে তার জন্য উন্নয়ন বোর্ড তাদের পাশে থাকবে। শুধু শিক্ষা বৃত্তি নয়, পার্বত্য এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নিজেদের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। দুর্গম এলাকায় স্কুল নির্মাণের সাথে সাথে আবাসিক হোস্টেলেও নির্মাণ করেছে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে। শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হলে হবে না। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারগরি শিক্ষায়ও শিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষিত মানুষ যেন বেকার না থাকে সেটিও নিয়ে বোর্ড কাজ করছে। আগামীতে এই বৃত্তির টাকা এবং সংখ্যা বাড়ানো হবে কথাও জানানো হয়।
রাঙামাটি সদর উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ১২৩, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ১৮৫ শিক্ষার্থীকে বিতরণ করা হয়। এছাড়া বরকল উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ২২, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ২২ জন, বিলাইছড়ি উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ১৬, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ৩৩ জন, জুরাছড়ি উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ২১, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ১০ জন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ৪৬, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ৩৩ জন, কাপ্তাই উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ১৪, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ২৯ জন, কাউখালী উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ১৯, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ২৯ জন, নানিয়ারচর উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ৪১, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ৩১ জন, রাজস্থলী উপজেলা পর্যায়ে ০৯, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ২৪ জন, লংগদু উপজেলায় কলেজ পর্যায়ে ১৯, বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে ২৮জনকে এই বৃত্তি প্রদান করা হয়।
কলেজ পর্যায়ে ৩৩০ জন শিক্ষার্থীদের ৭ হাজার টাকা করে ২৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২৪ জনকে ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। অর্থাৎ মোট ৭৫৪ শিক্ষার্থীকে ৬৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়।