জিয়াউল জিয়া ॥
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে জেলার বরকল উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৯ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে রাঙামাটি দুর্নীতি দমন কমিশন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক জাহিদ কামাল। তিনি আরও জানান, রাঙামাটির দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করেন।
মামলার ১নং এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের কামিনি চাকমা জমির ওপর মৎস্য বাঁধ ও পাকা সেচ ড্রেইন নির্মাণ প্রকল্পটি ২০০১৭-১৮ অর্থবছরে গৃহীত হয়। ৪৮ মিটার বাঁধটি নির্মাণের জন্য ২০ লাখ ও ১৯২ মিটার দৈর্ঘ্যরে পাকা ড্রেইন নির্মাণের জন্য ১০ লাখসহ মোট ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তদন্তে দুটি প্রকল্পে ৮ লাখ ৮০ হাজার ১৫৫.৮৫ টাকা আত্মাসাৎ করার প্রমাণ পাওয়া যায়। উক্ত কাজে সংশ্লিষ্ট রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, সহকারী প্রকৌশলী জ্যোর্তিময় চাকমা, নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়–য়া, ঠিকাদার প্রো. মেসার্স সমৃদ্ধি এন্টারপ্রাইজ মিলন তালুকদার এর নামে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার ২নং এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরকল উপজেলার সুবলং বাজারে পানীয় জলের ব্যবস্থাকরণ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পটি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে গৃহীত হয়। প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৭ লাখ টাকা। তদন্তে উক্ত স্থানে কোন নলকূপ পাওয়া যায়নি। ফলে ঐ কাজের সাথে জড়িত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়–য়া, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ, ঠিকাদার মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজ চিংহেন রাখাইন এর নামে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার ৩নং এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরকল উপজেলায় সুবলং ইউনিয়নে সুবলং কমিউনিটি সেন্টার ঘর ও পাকা সিঁড়ি নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে গৃহীত হয়। প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৯ লাখ টাকা। তদন্তে সুবলং কমিউনিটি সেন্টার ঘর ও পাকা সিঁড়ি নির্মাণ প্রকল্পটির কোন অস্তিত্বহীন ভূয়া প্রকল্প হিসেবে প্রমাণিত হয়। উক্ত প্রকল্পের সাথে জড়িত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, সহকারী প্রকৌশলী জ্যোর্তিময় চাকমা, নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়–য়া, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ, ঠিাকাদার অমলেন্দু চাকমা প্রোঃ মেসার্স অমলেন্দু চাকমা, জেলা পরিসদ সদস্য সবির কুমার চাকমা এর নামে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার ৪নং এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরকল উপজেলাধীন পূর্ব এরাবুনিয়য়া মৎস্য বাঁধ হইতে হারুন টিলা এলাকার আহাদ এর বাড়ী পার্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামে প্রকল্প ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গৃহীত হয়। উক্ত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১০ লাখ টাকা। তদন্তে উক্ত স্থানে কোন মৎস্য বাঁধ এবং হারুন টিলা নামের কোন জায়গাও পাওয়া যায় নি। তদন্তে এটি অস্তিত্বহীন ও ভূয়া প্রকল্প ছিলো। উক্ত প্রকল্পের সাথে জড়িত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, সহকারী প্রকৌশলী জ্যোর্তিময় চাকমা, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়–য়া, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ, ঠিকাদার মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজ চিংহেন রাখাইন, মামুনুর রশীদ মামুন, চেয়াম্যান ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিসদ সদস্য সবির কুমার চাকমা।
রাঙামাটির দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহিদ কামাল বলেন, আজ এজাহার পেয়েছি। এজাহার মূলে আবারও তদন্ত করা হবে। তদন্তে প্রমাণিত হলে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।