নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙামাটিতে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর চার কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার সকালে এক মতবিনিময় সভা শেষে রাঙামাটি জেলা, সদর উপজেলা, পৌর ও সুজন বন্ধু কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা রাঙামাটি চতুর্থ শ্রেণি কমর্চারী সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সুজন রাঙামাটির সভাপতি দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুজন এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার, চট্টগ্রাম সমন্বয়ক মাইনুল ইসলাম, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সিএইচটি নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজন রাঙামাটির সম্পাদক এম জিসান বখতিয়ার।
প্রধান অতিথি দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন, নিয়োগ আইনে কমিটিতে সরকারি ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ, ‘না’ ভোটের বিধান চালু এবং নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ বিধিমালার সংশোধন করতে হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণমুক্ত করা, কোনো দলীয় কর্মসূচিতে সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণসহ দুটি বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের সাংবিধানিক আকাক্সক্ষার আলোকে (১১, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য আইন প্রণয়নের প্রত্যাশা থাকলেও তা অদ্যাবধি হয়ে ওঠেনি, বাস্তবায়ন করা যায়নি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণের চেতনা। অথচ স্থানীয় সরকারের কর্মকান্ডে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচনগুলো নির্দলীয় ভিত্তিতে সংসদীয় পদ্ধতিতে আয়োজন, ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ এবং ক্ষমতা, দায়িত্ব ও সম্পদে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা ইত্যাদি এখন সময়ের দাবি। এ সকল দাবি পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন করা উচিত।
এসময় বক্তারা বলেন, রাজনীতি দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন দেশকে অচল করে দেয়। রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য হলেও বর্তমানে রাজনীতিতে ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে মানুষ সুশাসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারলে গণতন্ত্র টেকসই হয় না। নির্বাচন সংস্কারের মাধ্যমে মাফিয়াতান্ত্রিক রাজনীতি বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে।
সভা শেষে দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা সভাপতি, এম জিসান বখতিয়ারকে সম্পাদক করে জেলা কমিটি, পলাশ কুসুম চাকমা সভাপতি ও শংকর হোড়কে সম্পাদক করে সদর উপজেলা, ইন্দ্রদত্ত তালুকদার সভাপতি ও ইরফান রোমেলকে সম্পাদক করে পৌর কমিটি এবং মিশু দে সভাপতি ও রিকোর্স চাকমাকে সম্পাদক করে সুজন বন্ধু কমিটি ঘোষণা করা হয়।