হেফাজত সবুজ
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বাসিন্দা সোহেল রানা। গেল ৪ এপ্রিল তার মামলার শুনানি হয়। আইনজীবির ব্যস্ততার কারণে মামলার পরবর্তী তারিখ মামলার অবস্থা জেনে যেতে পারেনি। ইতোমধ্যে গেল ১৪ এপ্রিল হতে সরকারের নির্দেশে রাঙামাটি আদালতের চলমান মামলার তথ্য দেয়া হচ্ছে অনলাইনে। তাই নিজের মোবাইল থেকে causelist.judiciary.gov.bd ব্রাউজ করে জেনে নিচ্ছেন মামলার বর্তমান অবস্থা। অথচ আগে মামলার তারিখ, হাজিরা, বা সাক্ষ্য গ্রহণের মত বিষয়ে জানতে আইনজীবি বা তার সহকারীর কাছে ধর্না দিত হতো বিচার প্রার্থীদের। এখন নিজেই নিজের মোবাইল থেকে জানতে পারছেন মামলার যাবতীয় কার্যক্রম। ঘরে বসে কিংবা ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রে গেলেই মিলছে আদালতে চলমান মামলার আপডেট। দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দারা ঘরে বসেই অনলাইনে জানতে পারছেন আদালতে চলমান মামলার অবস্থা। এতে যেমন সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ, তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে সময়ও। আদালতে এমন সেবা চালু হওয়ায় সন্তুষ্টির কথা জানালেন বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবিরা।
সোহেল রানা বলেন, আগে মামলার তথ্য জানতে অনেক কষ্ট হত। পেশকার বা আইনজীবি কাছে ধর্না দিতে হত। এখন নিজের মোবাইল থেকে সব তথ্য পেয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে।
অপর বিচার প্রার্থী নজু মিয়া বলেন, আমার কাছে মোবাইল নেই। কিন্তু আমি এখন ইউনয়ন তথ্য কেন্দ্র থেকে আমার মামলার সব কিছুই জানতে পারছি। কোন টাকাও লাগছে না। এমন সেবা চুল করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আগে আমাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হত। আইনজীবি বা উনার মুহুরি ব্যস্ততা দেখাতেন। অনেক সময় মুহুরিরা এই কাজের জন্য টাকা চাইতেন। অনলাইন হওয়ায় এমন সব ভোগান্তি আর হবে না।
আদালত সুত্রে জানা যায়, জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে ১ হাজার ৫৩২ মামলার শতভাগ ও চিফ জুডিসিয়াল আদালতে ৭ হাজার মামলার মধ্যে প্রায় চার হাজার অনলাইনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন।
আইনজীবি আফসার আলী বলেন, সরকারে এমন উদ্যোগে স্বাগত জানাই। অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে আমরা মক্কেলদের মামলা বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সময় লাগতো। এতে বিচার প্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়তেন। কিন্তু এই সেবার মাধ্যমে বিচার প্রার্থী নিজেই নিজের মামলার সব তথ্য জানতে পারছেন, এতে আমাদের ওপর চাপটা অনেক কমে গেছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি সাইফুল ইসলাম অভি বলেন, এটা স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট কাজ। সরকার সব ক্ষেত্রে সেবাকে জনগণের দোরগোঁড়ায় নিয়ে গেছেন। এটা তার একটি জ্বলন্ত উধাহরণ।
এই সেবার মাধ্যমে আদালতে বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগ কমে আসবে বলে জানালেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাঙামাটি আইনজীবি সমিতির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম।