শংকর হোড় ॥
ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির সুযোগ সবার থাকে না, বিশেষ করে কারাবন্দিদের। তবে তাদের জন্যও এদিন বিশেষ আয়োজন করেছে রাঙামাটি কারা কর্তৃপক্ষ। স্বজন থেকে দূরে থাকা এসব কারাবন্দিরা বিশেষ এই দিনে যাতে নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন সেজন্য এদিন ছিল ঈদের বিশেষ নামাজ, উন্নতমানের খাবার ও স্বজনদের সাথে দেখা করার সুযোগ।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সকালে সাড়ে আটটায় কারাবন্দিরা কারাগারের মধ্যেই আদায় করছেন ঈদের নামাজ। সকালে ঈদের নামাজ শেষে একে অন্যের সাথে কোলাকুলির মাধ্যমে চার দেয়ালের মাঝেও নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন। একসাথে বসে ঈদের সেমাই খেয়েছেন। পরিবারহীন এইসব কারাবন্দিদের জন্য দুপুর ও রাতে গরুর মাংস, খাসীর মাংস, মাছ, পোলাও, মুরগীর রোস্টসহ আরও বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন। ঈদের এই বিশেষ দিনে যাতে নিজেরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য রাঙামাটি কারা কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজন। জেল কর্তৃপক্ষও বন্দিদের সাথে কোলাকুলি আর কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়।
কারা কর্তৃপক্ষের এই আয়োজন এইখানেই শেষ নয়। কারাবন্দিদের স্বজনদের সাথে এদিন দেখার করার সুযোগ দিয়েছেন। যারা দেখা করতে এসেছেন তাদেরকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে কারা কর্তৃপক্ষ। আনন্দের এই দিনে সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্বভাব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজন। আর এমন আয়োজনে খুশি স্বজনরাও।
কারাবন্দির সাথে দেখা করতে আসা স্বজন নূর মোহাম্মদ জানান, খুব সুন্দর আয়োজন করেছে এবার জেল কর্তৃপক্ষ। গত বছরও আমি এসেছিলাম আমার আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে, কিন্তু এবারের আয়োজনটা ভিন্ন ছিল। তারা আমাদেরকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করেছে। আমি কারাবন্দি আমার আত্মীয়ের সাথে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন জেলের পরিবেশ ভালো, সবাই মিলে ঈদের নামাজ শেষে সেমাই খেয়েছেন। দুপুর ও রাতে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারাগারের এই ধরনের পরিবেশ ভালো লাগছে।
রাঙামাটি কারাগারের জেল সুপার দিদারুল আলম বলেন, স্বজনহীন কারাবন্দিদের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে কারা কর্তৃপক্ষ এমন আয়োজন করেছে। তাদের জন্য সকাল, দুপুর ও রাতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। স্বজনদের মিষ্টি ও ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। আমরা চাই গতানুগতিক জেলের বিষয়ে মানুষের যে ধারণা, সেটা পরিবর্তন হোক। তিনি আরো বলেন, কারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কারাবন্দি ও স্বজনদের নিয়ে ভিন্ন কিছু আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছেন, সেই চিন্তা থেকে আমাদের এই আয়োজন।