নিজস্ব প্রতিবেদক
‘পিপিআর রোগের টিকা দিন-ছাগল, ভেড়া সুস্থ রাখুন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে রাঙামাটির পিপিআর রোগের টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে রবিবার ছাগল ও পিপিআর রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে বিনামূল্যে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
টিকা প্রদান কার্যক্রমে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমীন। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লেনিন দে, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ এরশাদ বিন শহীদ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ¯িœগ্ধা তালুকদার। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা যথাক্রমে রতন কুমার দে, প্রীতিরেশ দেওয়ান, রিন্টু চাকমা ও সুদীপ দেওয়ানজী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পিপিআর রোগটি মূলত ছাগল ও ভেড়ার ভাইরাসজনিত একটি মারাত্মক রোগ। বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে পৃথিবীতে এই ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা গেলেও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এই রোগ প্রথম দেখা দেয়। এই রোগে ছাগল ও ভেড়ার মৃত্যুহার প্রায় ৯০ শতাংশ, ফলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়। এই রোগের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ছাগল ও ভেড়া পালনকারীদের মধ্যে সচেতনতা জরুরি। এই রোগের লক্ষণসমূহ হলোÑ ছাগল ও ভেড়া পিপিআর রোগে আক্রান্ত হলে ঝিমায় ও খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি দেখা দেয়, জ্বর হয়, যা শরীরের তাপমাত্রা ১০৭-১০৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, নাকে, মুখে ও চোখে পানির মতো তরল পদার্থ ঝড়ে, মুখের ভেতর চোয়ালে-মাড়িতে ও জিহ্বায় ঘা হয় এবং জিহ্বার গোড়া ফুলে যায়, ছাগল পিঠ বাঁকা ও মুখ নিচু করে থাকে, পরবর্তীতে নাক বন্ধ হয়ে যায় ও শ্বাসকষ্ট হয় এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ রোগে আক্রান্তের কয়েকদিন পরে রক্তমিশ্রিত ও দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা ও পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং ছাগল বা ভেড়া ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে মারা যায়।
এর হাত থেকে ছাগল ও ভেড়াকে বাঁচাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরাধীন পিপিআর রোগ নির্মূল ও ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী প্রতিটি জেলা উপজেলায় বিনামূল্যে টিকা প্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।