হাবীবুল্লাহ মিসবাহ, রাজস্থলী ॥
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬টি প্রধান শিক্ষক এবং ৬৮টি সহকারী শিক্ষকসহ ৯৪টি পদ শূন্য থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কর্মসূচি।
উপজেলার ঘিলাছড়ি, গাইন্দ্যা এবং বাঙ্গালহালিয়া এই তিনটি ইউনিয়নে মোট ৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও ২৬টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার মোট ৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে ৬৮টি। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান কার্যক্রম কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। এই নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে সন্তানদের পড়ালেখা নিয়ে চরম হতাশা এবং অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কয়েকজন অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমরা সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করার জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি করাই। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের এতগুলো পদ শূন্য থাকায় সন্তানরা সঠিকভাবে পাঠ্যবই আত্মস্থ করতে সক্ষম হচ্ছে না। সন্তানরা পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে এবং অনিহা চলে আসছে। এই কোমলমতি শিশুরা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে না পারে তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদগুলো দ্রুত নিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়।
প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদের বিষয়ে রাজস্থলী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাজুরুল ইসলাম জানান, অবসরজনিত এবং নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে উপজেলার ২৬টি প্রধান শিক্ষক এবং ৬৮টি সহকারী শিক্ষকসহ ৯৪ পদ শূন্য রয়েছে। যার কারণে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।
আমরা এই বিষয়ে আমাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে শূন্যপদগুলোর চাহিদা দিয়েছি। শূন্যপদগুলো পূরণ হলে আশা করি এই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার হার মানসম্মত পর্যায়ে উন্নত হবে।
রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজীব কান্তি রুদ্র জানান, উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সংকট একটা বিরাট সমস্যা। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক না থাকায় এখানে প্রাথমিক শিক্ষা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন আলোচনা সভায় আমরা উত্থাপন করেছি। আশা করি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় রাজস্থলী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটের বিষয়টি সুনজরে দেখবেন।