হাবীবুল্লাহ মিসবাহ, রাজস্থলী ॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সারা দেশে ৫৬৪ টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছিলো। ইতোমধ্যেই প্রতি ধাপে ৫০টি করে ২০০টি মসজিদ উদ্বোধন সম্পন্ন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার ৫ম ধাপে ৩৪টি জেলায় ৫০টি মসজিদ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাঙামাটির রাজস্থলীতেও একইসাথে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়।
এসময় মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশ, রাজস্থলী আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন লেফটেন্যান্ট আবির আরমান নূর,
রাজস্থলী থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসেন, কৃষি অফিসার আবুল খায়ের, রাঙামাটি গণপূর্ত অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌকির হোসাইন, উপসহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুল আকবর চৌধুরী, উপসহকারী প্রকৌশলী সুজন পাল, রাজস্থলী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, রাঙামাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাস্টার ট্রেইনার মো. বখতেয়ার হোসেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজস্থলী উপজেলার মডেল কেয়ার টেকার মাওলানা নুরুল হকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিন সাহেবান, এলাকার মুসল্লি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ আরো অনেকে। গণভবন থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিজস্ব অর্থায়নে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ধাপে ৫০টি, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৫০টি, ১৬ মার্চ তৃতীয় ধাপে ৫০ এবং ১৭ এপ্রিল চতুর্থ ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাকি মসজিদগুলোর নির্মাণকাজও শেষের দিকে।
সরকারি অর্থায়নে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। শুধু নামাজ আদায় নয়, এসব মসজিদ হবে গবেষণা ইসলামি সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের আলাদা ওজু এবং নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মরদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এ ছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা ও গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে। মডেল মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
৫৬০টি মডেল মসজিদে সারা দেশে প্রতিদিন চার লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ছয় হাজার ৮০০ জনের। এছাড়াও থাকবে নান্দনিক সব সুযোগ সুবিধা।