জিয়াউল জিয়া
রাঙামাটি শহরের রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষকের অপসারণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কর্মসূচি পালন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার সকালে রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের বিরদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
এসময় সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করে প্রধান শিক্ষককে স্বসম্মানে বহাল রাখার দাবিতে শ্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। সাবেক শিক্ষার্থী পারভেজ ইসলাম ও জনি দে এসময় বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিদ্যালয়ের আজকে এই অবস্থানের পিছনে বড় অবদান আমাদের বর্তমান শিক্ষক রণতোষ স্যারের। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে স্কুলটিকে অত্র এলাকায় সেরা একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকও নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমান দেশের অস্থির সময়ে সুযোগ বুঝে সাম্প্রদায়িক একটি মহল তাঁকে সরানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেটা কোনওভাবেই মেনে নিবো। কারো ষড়যন্ত্রে আমাদের স্যারকে অপসারণ করার সুযোগ দিবো না। শিক্ষার্থীরা বলেন, যদি অনিয়মের অভিযোগে আন্দোলন হতো তাহলে পাহাড়ি-বাঙালি সব শিক্ষার্থীরাই এই আন্দোলনে শরিক হতো। কিন্তু একটি পক্ষ এই আন্দোলনে জড়িত হওয়ায় এটা পরিষ্কার যে, স্যারের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের অপসরণের দাবিতে শহরের জিমনেশিয়াম থেকে একটি মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সমাবেশ করে অপর পক্ষ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক শিক্ষার্থী পহেলা চাকমা, সোহাগ খীসা, তুহিন চাকমা, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পনি চাকমা ও বিনয় চাকমা। এতে আরও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান।
এসময় বক্তারা বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালনকালে বিনা রশিদে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়সহ নানা দুর্নীতি করে আসছেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। শহরের স্কুল হওয়ার পরও এখানে শিক্ষার মান খুবই খারাপ। এখানে পাশের হারও খুবই কম। এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি থেকে সার্কেল চিফকে বাদ দিয়ে জেলা প্রশাসককে নির্বাচিত করেন। তাই আমরা তার অপসারণ দাবি করছি। সনদ তুলতে গেলে ৫০০ টাকা দিতে হয় এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর নামে টাকা উত্তোলনের পরও এখনো সেই অনুষ্ঠান আয়োজন করেনি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচি ঘিরে শহরের উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।