নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
আধিপাত্যের জেরে বান্দরবানের রুমায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠনের গোলাগুলিতে নিহত এক জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাসনাল আর্মী (কেএনএ) এবং পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। বুধবার রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে কয়েকজন আহত এবং একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যৌথ বাহিনী একজনের মৃতদেহ দেখতে পান। বৃহস্পতিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করে। নিহতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তবে ধারণা করা গোলাগুলিতে নিহত ব্যক্তিকে মাটি চাপা দেয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, বন্দুকযুদ্ধে রামথাং বম নামের একজন মারা গিয়েছিল বলে তারা তারা শুনেছেন। তার বাড়ি রোয়াংছড়ি উপজেলার পাইখ্যং পাড়ায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, পাহাড়ের সশস্ত্র দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাস্থল থেকে মাটি খুঁড়ে এক জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রামথাং বম নামের একজনের মৃত্যুর কথা শোনা গেলেও উদ্ধার হওয়া লাশটি তার কিনা নিশ্চিত নয়। ময়না তদন্তের পর ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। গোলাগুলির ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে পাহাড়ের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) এবং পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ(গণতান্ত্রিক) মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকদিন ধরে গোলাগুলির ঘটনায় মুয়ালপি পাড়াসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেশকয়েকটি পাড়া পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত: চলতি মাসের ৭ এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খামতান পাড়া এলাকায় পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএ) সাথে অস্ত্রধারী আরেকটি গ্রুপের গোলাগুলিতে আটজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে সাত জন কেএনএ সশস্ত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলো।