বান্দরবান প্রতিনিধি
পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় জেলা বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলা দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার দীর্ঘ চারমাস বন্ধ থাকার পর বান্দরবান জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে উপজেলা দুটি পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হয়।
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, বান্দরবান জেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ী এলাকাগুলোতে যৌথ বাহিনীর জঙ্গী ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের কারণে নিরাপত্তা বিবোচনায় এবছরের ১৬ মার্চ থেকে রুমা, থানচি এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে অনিদিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ চারমাস পর গনবিজ্ঞপ্তি জারি করে রুমা ও থানচি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হলো। তবে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা এবং সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নিরাপত্তা বিবোচনায় রোয়াংছড়ি উপজেলায় ভ্রমণে অনিদিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা রুমা উপজেলার কিংবদন্তি বগালেক, রিজুক ঝর্না, জাদীপাই, তিনাপ সাইতার, দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং, ক্যাওক্রাডং এবং থানচি উপজেলার আকর্ষষীয় পর্যটন স্পট তমাতুঙ্গী, রেমাক্রী, তীন্দু, বড়পাথর, নাফাখুম, অমিয়খুম, বাকলাই ঝর্না, আন্ধারমানিক, বড়মদক, ছোটমদক’সহ দর্শণীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।
ট্যুরিস্ট পরিবহণ শ্রমিকনেতা মো: কামাল ও সুমন ভট্টাচার্য বলেন, দীর্ঘ চারমাস পর রুমা ও থানচি উপজলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝেও। নিষেধাজ্ঞায় পর্যটক না আসায় পরিবহণ শ্রমিকরা অর্থনৈতিক কষ্টে পড়ে যান। অনেকে ঠিকমত দুবেলা খেতে পারেনি, ঘরভাড়া পরিশোধ করতে পারেনি। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পর্যটকদরে আগমন বাড়লে লাঘব হবে শ্রমিকদের দু:খ কষ্ট।
বান্দরবান হোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুটি উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। নিষেধাজ্ঞা আতঙ্কে ঈদের ছুটিতেও পর্যটকের আশানুরুপ আগমন ঘটেনি বান্দরবান। রুমা ও থানচি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়ায় মুখ ফিরিয়ে নেয়া পর্যটকরা আবারও বান্দরবান ভ্রমণে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবোচনায় রুমা ও থানচি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হলো। তবে রোয়াংছড়ি উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। রোয়াংছড়ি ছাড়া জেলার বাকি ছয়টি উপজেলায় পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারবেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসন, পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং আইনশৃংখলা বাহিনী ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে নতুন নতুন পর্যটন স্পট খোঁজে বের করা হচ্ছে। পুরনো পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্য বর্ধণে নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।