নুরুল করিম আরমান, লামা
বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে কাঠ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি পোষা হাতি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। এ সময় হাতির মাহুতসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৬০০ ঘনফুট কাঠও জব্দ করা হয়। শনিবার উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি লেমুপালং এলাকার পালং খাল ও শীল ঝিরির মোহনা থেকে এসব কাঠ জব্দের পাশাপাশি হাতি উদ্ধার করা হয়। হাতিটি সিলেট জেলার মোমিন কোম্পানির বলে জানান বন কর্মকর্তারা।
সুত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সরই ও গজালিয়া -এ দুই ইউনিয়নের মঝামাঝি লেলুপালং এলাকার পাহাড়ে শ্রমিক লাগিয়ে বড় বড় আকারের গাছ কেটে হাতি দিয়ে পরিবহনের পর লোকালয়ে নিয়ে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছেন মোরশেদ আলম চৌধুরী ও তার ম্যানেজার মো. রফিক নামের দুই ব্যক্তি। স্থানীয়দের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলালের নির্দেশনায় লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি ও ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় সদস্যরা শনিবার সকাল থেকে দুপুরে পর্যন্ত লেমুপালং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অবৈধভাবে কাঠ পরিবহন কাজে ব্যবহৃত মাহুত সহ একটি হাতি আটক ও গর্জন, শিউলী, লালীসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ জব্দ করেন বন বিভাগ কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম রেজাউল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে হাতি দিয়ে গাছ পরিবহরের খবর পেয়ে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা বন বিভাগের দুইটি টিম লেমুপালং মৌজায় অভিযান চালিয়ে মাহুতসহ হাতি ও কাঠ জব্দ করেছি। ওই এলাকায় কাঠ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত আর কোন পোষা হাতির সন্ধান পাওয়া যায়নি। হাতি শনিবার দিনগত রাতেই কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ও আটক হাতির মাহুতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
অভিযানে কাঠ জব্দসহ মাহুত ও হাতি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল জানান, অবৈধভাবে কাঠ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত পোষা হাতির মালিকের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর অধীনে ও কাঠ পাচার কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফরেস্ট ট্রানজিট রুল্স ১৯৭৩ এর অধীনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অবৈধভাবে কাঠ পাচার রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।