অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই ॥
মা রহিমা বেগম ক্লোন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মায়ের প্রিয় সন্তান মো. রাসেল ওরফে সাদ্দাম গিয়েছিলো মায়ের জন্য ঔষুধ আনতে। কিন্তু মায়ের ঔষধ সে আনার সুযোগ পেলো না। কারণ ঔষধ আনার পূর্বেই সে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এদিকে মা মৃত্যু শয্যায় দিনাতিপাত করতে করতে রোববার পরপারে চলে গেলো। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস মায়ের শেষ দেখাটাও দেখা হলো না সাদ্দামের।
এমনই হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায়। যার কথা বলছিলাম মো. রাসেল ওরফে সাদ্দাম। সে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন। গত ৫ই আগস্ট এর পূর্বে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় কাপ্তাই থানা পুলিশ তাকে গত কয়েকদিন পূর্বে গ্রেফতার করেছে। যার ফলে বর্তমানে সে ওই মামলায় কারাগারে রয়েছে।
এদিকে সাদ্দামের পিতা মো. তাজুল ইসলাম ও বড় বোনের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তারা ঘটনার বর্ণণা দিয়ে বলেন, সাদ্দাম সম্পূর্ণ নির্দোষ। সে ছাত্রলীগ করতো কিন্তু কখনো কাউকে হামলায় জড়িত ছিলোনা। পুলিশ অজ্ঞাত আসামীর তালিকায় তাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু ছেলে কারাগারে গিয়েছে এই খবর শুনে ক্লোন ক্যান্সারে আক্রান্ত মা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং গত কয়েকদিন যাবৎ মায়ের রক্ত বমি হয়। ছেলেকে মায়ের কাছের নিয়ে আসবেন বলে কথাও দিয়েছিলেন পিতা তাজুল ইসলাম। কিন্তু ছেলেকে আর আনতে পারলোনা এর আগেই পরপারে চলে গেলো মা রহিমা বেগম। এদিকে রোববার দুপুরে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সাদ্দামের বড় বোন কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ভাইকে নিয়ে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। গত শুক্রবার মা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে থাকাকালীন কাপ্তাই বড়ইছড়ি সদরে ঔষুধ আনতে গিয়ে পুলিশ পরিচয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে কাপ্তাই থানা হতে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মা অনেক অসুস্থ তাই অনেকজনের কাছে ভাইকে ছাড়াতে আকুতি মিনতি করি। সকলে আশ্বাস দিয়েছে আমার ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ভাই ছাড়ার পাওয়ার আগেই মা চলে গেলো। এদিকে ভাই মোঃ সাদ্দাম কারাগারে থাকায় মাকে শেষ দেখাও দেখতে পারেনি বলে কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন।
কাপ্তাই থানার ইনচার্জ মো. মাসুদ বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কাপ্তাইয়ে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।