হেফাজত সবুজ
সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আশান্বিত হওয়ার মতো কোন পদক্ষেপ আমাদের চোখে পড়েনি। চুক্তি স্বাক্ষরের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোন সরকারই চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখায়নি। তাই এই সরকারের কাছে দাবি থাকবে দ্রæততম সময়ের মধ্যে চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। যাতে পাহাড়ে মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে। সংবিধানে পাহাড়ের মানুষের বঞ্চিত রাখা হয়েছিলো। সংবিধান সংশোধন, সংযোজন বা নতুন সংবিধান প্রণয়নের আলোচনা চলছে। অতীতের মতো পাহাড়ের জনগণ যাতে বঞ্চিত না হয় এবং পাহাড়ের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে সেই বিষয়ে দৃষ্টি রাখার আহŸান রইল।
রাঙামাটিতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা’র ৮৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার এসব কথা বলেছেন। রবিবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, চুক্তি নিয়ে আর গোল পাকাবেন না। এটাকে স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে নিন। উদার মন নিয়ে এগিয়ে আসুন। আপনারা যদি মনে করেন এরা ভেঙ্গে ৪/৫ ভাগে ভাগ হয়ে গেছে, তাদের নিয়ে যা খুশি তাই করা যাবে, তাহলে মহা ভুল করা হবে। মনে রাখবেন পাহাড়ের মানুষের মনে তুষের আগুনের মত আগুন জ্বলছে। যে জাতি একবার লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে, যে জাতি রক্ত দিতে জানে সে জাতিকে এভাবে অবহেলা করবেন না।
তিনি আরও বলেন, এখন এগত্তর বা এক সাথে একটা কথা শোনা যাচ্ছে। আমি বলতে চাই, আমরা (জেএসএস) এক সাথেই আছি। মানুষের সাথেই আছি। বরং প্রসীতরা পৃথক হয়ে গেছে। প্রসীতরা যখন আমাদের সাথে ছিল, তখন তাদের অনেক সুবিধা দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে তারা কি করোছে তা নতুন করে কিছু বলার নাই। পাহাড়ের সকলে তা জানে। সাধারণ মানুষ এই আপনাদেরই বলতে হবে বুঝতে হবে প্রসীতরা বেঈমান, তারা জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। তারা প্রতারণা না করলে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য এমন অপেক্ষা করতে হতো না। কথায় নয় আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গামানিক চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেব ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী শিশির চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের আহŸায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাডভোটে ভবতোষ দেওয়ান ।
আলোচনা সভায় অন্য বক্তারা বলেন, এমএন লারমা শুধু পাহাড়ের নেতা ছিলেন না। তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানব জাতির কল্যান কাজ করে গেছেন। আমাদের উচিত তাঁর জীবন দর্শন মেনে চলা। তিনি পাহাড়ের মানুষের জন্য অনেক কিছু করে গিয়েছেন। অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিলো। তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়ন জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে।