বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিককে প্রধান করে ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠনের ঘোষণাকে ইতিবাচক ও ‘জনগণের সংবিধান’ রচনার ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ আখ্যায়িত করে সাধুবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। দলটি উক্ত কমিশনে সদস্য হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সংবিধান সম্পর্কে অভিজ্ঞ একজন পাহাড়ি এবং সমতল অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহ থেকেও অনুরূপভাবে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে উক্ত দাবি জানিয়ে বলেন, ‘জনগণের প্রকৃত সংবিধান রচনা করতে হলে অবশ্যই দেশের সকল জাতিগোষ্ঠী ও সকল শ্রেণীর আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে। এজন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে একজন পাহাড়ি এবং সমতল অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহ থেকেও একজনকে উক্ত কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত যৌক্তিক ও জরুরি।’
এ যাবত সংবিধান প্রণয়ন ও সংশোধনকালে একদলীয় স্বেচ্ছাচারিতা ও বৃহৎ জাতিসুলভ দাম্ভিকতা দেখিয়ে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ন্যায্য দাবিকে বার বার উপেক্ষা করা হয়েছে মন্তব্য করে বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গঠিত সংবিধান প্রণয়ন কমিটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এমনকি উক্ত কমিটির কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ সে সময় যে দাবি পেশ করেছিলেন, তাও প্রত্যাখ্যান করা হয়। এভাবে সংবিধানে পাহাড়িদের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন না হওয়ার পরিণাম এক সময় ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করে, যার করুণ কাহিনী কমবেশি সবার জানা।’
১৯৭২ সালের পর এ পর্যন্ত সতের বার সংশোধন করা হলেও সংবিধানটি সকল জাতিসত্তা ও সাধারণ জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক হয়ে ওঠার পরিবর্তে তা ফ্যাসিস্ট শাসকের দমন-পীড়ন ও কালাকানুন প্রয়েগের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, ‘অন্যদিকে সাংবিধানিকভাবে দেশের সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ওপর বাঙালি জাতীয়তা আরোপ করে তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে।’
৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বর্তমানে দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার যে শর্ত ও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সর্বাগ্রে রাষ্ট্রের মূল দলিল সংবিধানকে নতুনভাবে রচনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে ইউপিডিএফ নেতা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে প্রসিত খীসা ‘জনগণের প্রকৃত সংবিধান’রচনার মাধ্যমে বাঙালি, পাহাড়িসহ দেশের সকল জাতিসত্তার স্বীকৃতি, সমানাধিকার, সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘু ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসমূহের জাতীয় অস্তিত্ব ও ভূমি অধিকারের প্রতি সাংবিধানিক নিশ্চয়তা বিধানের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।(বিজ্ঞপ্তি)