অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই
ভারতের ১০টি রাজ্য সাইকেলে ভ্রমণ সমাপ্ত করে ঘরে ফিরলেন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সন্তান বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা। মঙ্গলবার সকালে তিনি প্রায় ৯০ দিন পর কাপ্তাইয়ে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছান।
এর আগে গত ২০২৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর সাইকেলে ভারত ভ্রমনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে তিনি সাইকেল নিয়ে রওনা করেন। এর পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে তিনি সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ শুরু করেন। একে একে ভারতের ১০টি রাজ্যের পাঁচ হাজার ৭শত কিলোমিটার পথ তিনি সাইকেল চালিয়ে ভ্রমন সমাপ্ত করেন। এসময় তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা, ছত্তিসগড়, তেলেঙ্গানা, আন্ধ্রাপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরেলা, গোয়াসহ এই ১০টি রাজ্য ৭৩ দিনে সাইকেলে ভ্রমণ সমাপ্ত করেছেন। ভ্রমণকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন মন্দির, গির্জা, পেট্রোল পাম্প, বাস স্টেশন, ট্রেন স্টেশন, কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁবু ক্যাম্পিং করে রাত্রি যাপন করেছেন। এছাড়া ভারতের অনেক সহৃদয়বান ব্যক্তিও তাঁকে বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
এবিষয়ে কথা বলে বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, ২০২৩ সালে ১৭ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বনগাঁ দিয়ে প্রবেশ করে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা হতে বাইসাইকেলে পুরো ভারত ভ্রমণের যাত্রা শুরু করেন তিনি। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৩ দিনে তিনি ৫ হাজার ৭শত কিমি পথ পাড়ি দিয়ে ভারতের ১০টি অঙ্গ রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করেন। এদিকে ভারতের সবকটি রাজ্যে সাইকেলে ভ্রমণের ইচ্ছা থাকলেও ভিসার নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের পর্যটক ভিসার মেয়াদ সমাপ্ত হওয়ায় ১০টি রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। তবে তিনি জানান, ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী দুইমাস পর ভারতের বাকি ১৯টি রাজ্য ভ্রমণ সমাপ্ত করতে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করবেন তিনি। এদিকে ভারতে সাইকেল ভ্রমণ সমাপ্ত করতে বীর কুমারকে পানাম সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তি সহযোগিতা করেছেন।
এদিকে ভারতের ১০টি রাজ্যে সাইকেলে ভ্রমণের পাশাপাশি তিনি ওইসব রাজ্যের মানুষের মাঝে রক্তদানে উৎসাহী করতে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং মাদক বিরোধী জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ভারতের ১০টি রাজ্যের মধ্যে দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শন করে সেখানার এমপি, প্রশাসক এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীদের দেখা করেছেন এবং তাঁদের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউপি এলাকার কুক্যাছড়ির বাসিন্দা সুশীল তঞ্চঙ্গ্যার সন্তান। এবং তিনি পেশায় একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। এছাড়া বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ইতিমধ্যে ২০২৩ সালের ৮ জুন হতে ১৮ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪০ দিনে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ সম্পন্ন করেছিলেন। সেইসাথে ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘতম সড়ক টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া পর্যন্ত বাইকেলে মাত্র ১১দিনে তিনি ভ্রমণ সমাপ্ত করেছিলেন।