শংকর হোড় ॥
রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালিতে ভয়াবহ আগুনে প্রায় ৯৫টি রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সোমবার দুপুরে পৌনে একটায় ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে মুহূর্তেই আগুন আশপাশের রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আগুনে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে একটায় একটি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সাজেকের অধিকাংশ রিসোর্ট কাঠ ও বাঁশের তৈরি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া সাজেক ভ্যালিতে দমকলের কোনও স্টেশন না থাকায় এবং পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। খবর পাওয়ার পর নিকটবর্তী দমকল স্টেশন খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলা থেকে একটি ইউনিট রওনা দেয়। পাহাড়ি পথে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এরপর পানি নেভানোর কাজ শুরু করলেও সাজেকে পানি না থাকায় দূর গ্রাম থেকে বার বার পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছিল। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর থেকে আরো দুইটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। কিন্তু বাতাসের তীব্রতা, পর্যাপ্ত পানির অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। মোট তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ছিল।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, আগুনের তীব্রতা এবং পানি সঙ্কটের কারণে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিল না। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আগুনে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সেনাবাহিনী, সাজেক থানা পুলিশ, সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় জনসাধারণ আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, সবমিলে ৯৫টি রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘর পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পানি ছিটানোর আলোচনা হলেও সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সেটা আপাতত হচ্ছে না। এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।