শংকর হোড়
রাঙামাটির সাজেকে পাহাড়ের দুই আাঞ্চলিক সংগঠন সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং প্রসীত খীসার ইউপিডিএফ’র মধ্যে একটি সশস্ত্র সংঘাতকালে গুলিতে আহত সাত বছরের শিশু রোমিও ত্রিপুরা তিন মাস পর চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সোমবার চিকিৎসারত অবস্থায় চট্টগ্রামে মারা যায় সে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম গন্ডছড়া এলাকায় দুই সংগঠনের সশস্ত্র কর্মীদের মধ্যে আধিপত্যের গোলাগুলির ঘটনায় বাড়ির উঠানে খেলতে থাকা রোমিও ত্রিপুরা তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাজেক অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আর্থিক অনুদানে দীর্ঘ ৩ মাস চট্টগ্রাম মেডিকেলে ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের তত্ত্বাবধানে রোমিও ত্রিপুরার চিকিৎসা চলে।
কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সোমবার মধ্যরাতে চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে শিশুটি।
রোমিও ত্রিপুরার বাবা ফবেন ত্রিপুরা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে রাত ১১টায় তাকে আইসিইউতে রেফার করেন চিকিৎসক। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিআইসিইউতে কোন সিট খালি ছিল না। তাই সেখানে থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ডেন্টাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক লাইফ সাপোর্ট লাগবে বলে জানান। কিন্তু ডেন্টাল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট না থাকায় সেখানে থেকে এশিয়ান হাসপাতালে নেয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করে আমার সন্তান।
ফবেন ত্রিপুরা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার সন্তানের মত আর কারো যেনো এমন পরিণতি না হয়। এইসব সশস্ত্র কর্মকান্ড বন্ধ করার দাবিও জানান তিনি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার শিশু রোমিও ত্রিপুরার পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিবারটিকে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন।