আদালতের মাধ্যমে সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলসহ রাজা-হেডম্যান-কার্বারি পদবি বিলোপ এবং পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার হরণের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকায় হাইকোর্টের সম্মুখে প্রতীকী অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় হাইকোর্টের গেইটে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা ও সাবেক সভাপতি সুনয়ন চাকমা। এসময় সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন কুচক্রী মহল পাহাড়িদের প্রথাগত আইন অর্থাৎ রাজা-হেডম্যান-কার্বারি পদবি বিলুপ্ত করার মাধ্যমে পাহাড়ি জনগণের প্রথাগত অধিকার হরণের ষড়যন্ত্র করছে। এর প্রতিবাদে আমরা হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতীকী অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছি। এই অবস্থান ধর্মগত কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯০০ সালের শাসন বিধি বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি। বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একসময় স্বাধীন ও স্ব-শাসিত অঞ্চল ছিল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা ১৮৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের আধিপত্য বিস্তার করলে পাহাড়িরা তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। ব্রিটিশ আমলে ১৯০০ সালে ৬ জানুয়ারি এক আইন জারি করা হয়। যার নাম ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০। এই আইনে পাহাড়ির নিজস্ব শাসনবিধি ও প্রথাগত ভূমি অধিকারসহ ইত্যাদি উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশরা চলে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হয়। পাকিস্তান সরকার ১৯৫৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই আইন সংশোধন করে। একই সাথে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরও বিভিন্ন সরকার এই আইন সংশোধন করে মৌলিক বিষয়গুলোকে বাদ দিয়েছে। বর্তমান অবধি ১৯০০ সালের আইনে যতটুকু পাহাড়িদের প্রথাগত আইনের অধিকার রয়েছে তাও বাতিল করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৯০০ সালের শাসন বিধি বহাল রাখার দাবিতে গত কয়েকদিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র-যুব-নারীসহ শত শত জনগণ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। ১৫ মে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিভ ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। পাহাড়ে জনগণের এই কর্মসূচির সাথে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি। (বিজ্ঞপ্তি)