নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো. রুহুল আমিন, জেলা পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অধীর চন্দ্র দাশ, প্রতিবন্ধী স্কুলের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আবছার।
সভায় বক্তারা বলেন, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর শোকের এবং একই সঙ্গে গভীর শ্রদ্ধার দিন। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর দিনটি পালিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসরদের দ্বারা নির্মমভাবে হত্যাকৃত দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে। এ দিবস আমাদের জাতির জন্য একদিকে দুঃখের স্মৃতি বহন করে, অন্যদিকে শহিদদের আত্মত্যাগের মহিমা উপলব্ধি করতে অনুপ্রেরণা জোগায়।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসটি ছিল এই পরিকল্পিত হত্যার চূড়ান্ত অধ্যায়। পাকিস্তানি সেনারা যখন নিশ্চিত হয়ে যায় যে তাদের পরাজয় অনিবার্য, তখন তারা জাতির মেরুদ- ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই বর্বর পদক্ষেপ নেয়। তারা বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, যাতে স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের পর নেতৃত্ব সংকটে পড়ে এবং সমাজের অগ্রগতি ব্যাহত হয়।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসররা ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতিজন এবং অন্যান্য পেশাজীবী বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করে। তাদের চোখ বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাযজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতির চিন্তার ধারক ও বাহকদের চিরতরে নির্মূল করা, যাতে স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
এই বর্বর কর্মকান্ডের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একটি নির্মম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। তবে তাদের এই ষড়যন্ত্র বাঙালি জাতিকে থামাতে পারেনি। স্বাধীনতার জন্য বাঙালির সংগ্রাম সফল হয়েছিল, কিন্তু এই হত্যাযজ্ঞের ক্ষত ইতিহাসে এক গভীর বেদনার দৃষ্টান্ত হয়ে রয়ে গেছে।