বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে পালিয়ে ফের বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমার সেনা-বিজিপি সদস্যরা। মঙ্গলবার বিকালে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দু’দফায় নতুন করে আষাঢ়তলী জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে মোট অনুপ্রবেশ করেছে ১৭৯ জন। এদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি এবং ইমিগ্রেশন সদস্য রয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিরস্ত্র করে জামছড়ি সীমান্ত এলাকা থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি ব্যাটেলিয়ান সদর দপ্তরে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আবছার ইমন জানান, আষাঢ়তলী সীমান্ত এলাকার জামছড়ি সীমান্তপথে নতুন করে প্রথম দফায় ২৯ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ১৫০ জন মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার বাহিনীর ছুঁড়া গুলিতে ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছাবের আহমেদ কোমড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। সে বর্তমানে কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সীমান্ত গোলাগুলির কোনো শব্দ না থাকায় লোকজনের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই।
এ ব্যাপারে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে নতুন করে মিয়ানমারের সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও ইমিগ্রেশনের সদস্যরা নতুন করে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যহত না হয়, সেজন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখা হয়নি মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যদের। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় উচ্চ পর্যায়ে কিভাবে তাদের আগেরমত ফেরত পাঠানো হবে। সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি, প্রশাসন’সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কবস্থায় রয়েছে।
প্রসঙ্গত: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলে আসছে। এরআগে গত ফেব্রæয়ারি মাসে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয়নিয়েছিল মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ৩৩০ জন। পরে গত মাসের ১৫ ফেব্রæয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত দেওয়া হয়।