মিশু মল্লিক
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির পর্যটন আইকন হিসেবে পরিচিত ঝুলন্ত সেতু অর্ধ মাসেরও বেশি সময় ধরে পানির নিচে ডুবে আছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর সেতুতে প্রথম পানি উঠতে শুরু করে। ১৮ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে আছে সিম্বল অব রাঙামাটি খ্যাত পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি। বর্তমানে সেতুর রেলিং পর্যন্ত পানি উঠে প্রায় পুরোটাই ডুবে গেছে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুতে প্রবেশের গেটটি খোলা থাকলেও টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। পর্যটকরা যাতে সেতুতে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য বাঁশ দিয়ে সেতুতে প্রবেশের পথটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, পাশাপাশি বিপদজনক চিহ্ন হিসেবে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে লাল পতাকা। তবুও কিছু কিছু পর্যটকরা সেতু সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করছেন। কিন্তু সেতুতে পুরোপুরো পানিতে ডুবে থাকার কারণে হতাশা ব্যাক্ত করছেন তারা।
কক্সবাজার থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক ফাহাদ সুজন বলেন, রাঙামাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটটি এভাবে পানিতে ডুবে থাকবে এটা আশা করা যায়না। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা শুধু এই সেতুটিই দেখতে আসেন, কিন্তু তাদের হতাশ হয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে। কতৃপক্ষের উচিত এটা নিয়ে ভাবা উচিত।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক হিমেল নন্দী বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। আমরা শুনেছিলাম যে সেতু পানিতে ডুবে গেছে, কিন্তু এখানে এসে দেখতে পাচ্ছি পুরো সেতুই পানির নিচে। এটা দেখে আমরা খুব হতাশ হয়েছি। কতৃপক্ষের উচিত এটা সংস্কার করা কারণ এই এক সেতুই রাঙামাটিকে উপস্থাপন করে। এভাবে সেতু ডুবে যাওয়া রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের জন্য ক্ষতিকারক।
দীর্ঘদিন সেতু ডুবে থাকার কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। পর্যটক না থাকায় ট্যুারিস্ট বোট চালক থেকে শুরু করে সেতু এলাকায় বসা ভ্রাম্যমাণ পাহাড়ী পণ্যের দোকানদার, সবার মুখেই হাতাশার ছাপ পড়েছে। ট্যুারিস্ট বোট চালক আবদুল সোবাহান বলেন, এই বর্ষা মৌসুমটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়ে ঝর্ণা, লেক দেখার জন্য রাঙামাটিতে পর্যটকরা আসেন। কিন্তু এবারের বর্ষা আমাদের জন্য হতাশার। ব্রীজ ডুবে যাওয়ার খবর সারাদেশে প্রচার হয়ে যাওয়ায় পর্যটক নেই বললেই চলে। আমরা সম্পূর্ণ অলস সময় পার করছি। এভাবে চলতে থাকলে কয়েকদিন পর আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
সেতু এলাকায় হাতে বোনা ব্যাগ ও পাহাড়ী ফলমূল বিক্রি করেন কণিকা চাকমা। তিনি বলেন, ব্রিজ ডুবে যাওয়ার পর থেকে একটা দিনও ভালো বেচাবিক্রি হয়নি। কোনদিন তো এক টাকাও বিক্রি হয়নি। কারণ এখন পর্যটক আসে না। কবে পানি কমবে আর পর্যটক আসবে আমি এখন সেই দিন গুনছি।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার মোঃ রমজান আলী বলেন, আজ ১৮ দিন হলো ব্রিজ পানির নিচে। প্রথমদিকে যেই পরিমাণ পানি ছিলো আমরা আশা করেছিলাম কিছুদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে। কিন্তু টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি আরো বেড়ে এখন ব্রিজ একেবারে ডুবে গেছে। প্রথমদিকে কিছু পর্যটক আসলেও এখন আর পর্যটক আসেনা। আমরা খুবই হতাশায় দিন পার করছি।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনে ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই সেতু ডুবে থাকার ফলে বর্তমানে দৈনিক আমাদের ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে। সেতু সংস্কার বা উপরে উঠানোর ব্যাপারে আমি উপরস্থ কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখন উনারা বিষয়টি দেখভাল করবেন।
১৭ দিন ধরে পানির নিচে সিম্বল অব রাঙামাটি
রাঙামাটি
3 Mins Read
Previous Articleযুব দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট
Next Article পর্যটন ব্যবসায়ীদের সাথে কোতয়ালী পুলিশের মতবিনিময়
এই বিভাগের আরও সংবাদ
সম্পাদকঃ ফজলে এলাহী
নির্বাহী সম্পাদকঃ হেফাজত সবুজ
প্রধান কার্যালয়
পৌর মার্কেট, দ্বিতীয় তলা, পৌরসভা এলাকা, রাঙামাটি-৪৫০০
ফোন : ০১৭১৮৫৪৭৮৭৮, ০১৬১৮৫৪৭৮৭৮।
ইমেইল : pahar24news@gmail.com
পাহাড়ের সংবাদ
আমাদের সম্পর্কে
© 2024 All Rights Reserved pahar24.com. Developed by MicroWeb Technology.