জিয়াউল জিয়া ও মিশু মল্লিক ॥
দীর্ঘ ৫৬ দিন কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে থাকার পর ভেসে উঠেছে সিম্বল অব রাঙামাটি খ্যাত পর্যটন ঝুলন্ত সেতু। বৃহস্পতিবার সেতুর পাটাতন থেকে হ্রদের পানি নেমে গিয়ে দৃশ্যমান হতে শুরু করে সেতুটি। এতে অবসান হয়েছে পর্যটকদের হতাশার স্থানটি।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স ঝুলন্ত সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, হ্রদের পানি সেতুর পাটাতন থেকে নেমে গিয়ে সেতুর নিচে ছুঁইছুঁই অবস্থায় রয়েছে। সেতুতে পর্যটকরা নির্বিঘেœ চলাচল করার জন্য ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে সেতুর পাটাতন। গত কয়েক সপ্তাহ যাবত রাঙামাটিতে বৃষ্টিপাত না হওয়ার ফলে উজানের ঢল বন্ধ রয়েছে, এতেই হ্রদের পানি কমে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুটি।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমরা ফেসবুকে জানতে পেরেছিলাম ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে গেছে। তাই রাঙামাটি বেড়াতে আসার প্ল্যানটা বাতিল করেছিলাম আমরা। আজ বেড়াতে এসেছি, এসেই জানতে পেরেছি সেতু থেকে পানি নেমে গেছে। তাই সবার আগে ঝুলন্ত সেতুতেই বেড়াতে আসলাম। সেতুর ওপর হাটতে পেরে ভালো লাগছে।
নরসিংদী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক বিজয় কর বলেন, আমরা জানতান ঝুলন্ত সেতু পানির নিচে আছে। কিন্তু আজ(বৃহস্পতিবার) সকালে রাঙামাটি নেমেই জানতে পারলাম ব্রিজ থেকে পানি সরে গেছে। তাই আমরা সবাই ব্রিজে এসেছি। এখানে ঘুরা শেষ করে তারপর কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে বের হবো। সেতুটি দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে ঝুলন্ত সেতু প্রধান আকর্ষণ তাই এতদিন বেড়াতে আসা পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুর আনন্দ উপভোগ না করে হতাশ হয়ে ফেরত যেতে হয়েছে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়াতে আজ থেকে সেতু ভেসে উঠেছে। এখন থেকে পর্যটক সমাগম বাড়বে বলে আশা করছি।
রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম, দীর্ঘদিন ডুবে থাকার পর আবারো ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতু। এটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ। এতদিন পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুতে না উঠেই ফেরত যেতে হয়েছে। এবার থেকে আর কাউকে হতাশ হয়ে ফেরত যেতে হবে না।
তিনি আরো বলেন, ঝুলন্ত সেতুতে আমরা পর্যটকদের নির্বিঘেœ চলাচলের জন্য মেরামত এবং ত্রুটিপূর্ণ অংশগুলো ঠিক করেছি। আশা করছি আগামীকাল বা পরশু থেকে সেতুটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে আসায় ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতু। কিছু সংস্কার কাজ চলছে। সেতুতে পর্যটক চলাচলে যে নিষেধাজ্ঞা ছিলো তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেতু ডুবে থাকায় রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি পর্যটক আসলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট রাঙামাটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উজান হতে নেমে আসা ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে যেতে শুরু করে খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। এরপর দীর্ঘ ৫৬ দিন পানির নিচে থাকার পর ভেসে উঠেছে আইকন অব রাঙামাটি খ্যাত এই সেতুটি।