নিজস্ব প্রতিবেদক
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনীত হওয়ায় রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে সংবর্ধনা ও তার সাথে মতবিনিময় করেছেন রাঙামাটি বনবিভাগ।
মঙ্গলবার রাঙামাটিস্থ বন সংরক্ষকের সম্মেলন কক্ষে রাঙামাটি অঞ্চলের বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে এই মত বিনিময় সভা হয়।
রাঙামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে জনাব দীপংকর তালুকদার এমপি’র সংক্ষিপ্ত জীবনীর উপর একটি প্রামান্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাইল করিম চৌধুরী, এসময় বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ মিঞা।
রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে সার্কেলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ী ল্যান্ডস্কেপের মাটি ও পানি সংরক্ষনের লক্ষ্যে অত্র অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে ব্রিটিশ সরকার ১৮৮০-৮১ সালে কর্ণফুলী, চেংগি, মাইনি, কাচালং, রাইনখিয়ং, সাঙ্গু, মাতামহুরী নদীগুলোর হেড ওয়াটার রিজার্ভার হিসেবে কাচালং ফরেস্ট, রাইনখিয়ং ফরেস্ট, সাঙ্গু ফরেস্ট এবং মাতামহুরী বনগুলোকে সংরক্ষিত বনভূমি ঘোষণা করেন ।
তিনি আরো বলেন, ১৯৬৬ সালের ফরেস্টাল সার্ভে কর্তৃক পাহাড়ী ভূমি ব্যবহার এবং ব্যবস্থাপনাতে মোট পাহাড়ী ভূমির ৭৩ % শুধু বন থাকার কথা। সমতাল ও সীমিত পাহাড়ীভূমির (৩%+৩%)বা ৬% এলাকাতে কৃষি ও হরটিকালচার, পাহাড়ী ঢাল এর ১৫% এ বন ও হরটিকালচার এবং অবশিস্ট ১% পাহাড়ীচূড়াতে বন/হরটিকালচার হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে ব্যাপকহারে বানিজ্যিকভাবে হরটিকালচার হওয়াতে পাহাড়ী ভূমি ব্যবহারে আমুল পরিবর্তন হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় পাহাড়ী অঞ্চলের বনায়ন সম্পর্কিত বিদ্যমান আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জসমূহ যেমন-সীমানা চিহ্নিতকরণ, ভূমির মালিকানা জটিলতা, আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গি, অনিয়ন্ত্রিত জুমচাষ, সংরক্ষিত বনের ভেতর অনুমোদনহীন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহন ইত্যাদি ও সম্ভাবনা এবং সেগুলো মোকাবেলার সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করেন। এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার এইসব সমস্যা সমসাধানে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদানের আশ^াস প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে,পার্বত্য চট্টগ্রামের বন সৃজনের ইতিহাস ও বাস্তবতা তুলে ধরে তা রক্ষার জন্য সবাইকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর অনুরোধ জানান । তিনি বলেন, বন বাঁচলেই বাঁচবে পাহাড়,এই পার্বত্য চট্টগ্রাম। বন রক্ষায় সবাইকে অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান তিনি। সভাশেষে তিনি পাহাড়ী বন ব্যবস্থাপনাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কল্পে বন বিভাগের উদ্যোগে একটি ড্রোন উড়িয়ে যাত্রা শুরুর উদ্বোধন করেন।