বিশেষ প্রতিবেদক, বান্দরবান ॥
বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিন্ড দানের মাধ্যমে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকালে উৎসবের শেষদিনে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে দুই শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু খালি পায়ে প্রাতঃভ্রমণ করে সারিবদ্ধভাবে লাইন ধরে মহাপিন্ড গ্রহণে বের হন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বান্দরবানের পাহাড়ি অধ্যুষিত মধ্যমপাড়া-উজানীপাড়া ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের কাছ থেকে ছোয়াইং ও পিন্ডদানের অর্থ গ্রহণ করেন।
দীর্ঘ দুই কিলোমিটার পথ পর্যন্ত পাহাড়ি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতিসহ উৎসবের নানা সামগ্রী ধর্মীয় গুরুদের দান করেন। পুণ্য লাভের আশায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের পিন্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্ন খাবারও দান করেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সামনে থাকা বৌদ্ধ মূর্তিকে পূজাও দেওয়া হয়। উৎসব অনুষ্ঠানে অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং , জেলা বিএনপির নেতা চনুমং মারমা প্রমুখ।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জানায়, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসে থাকার পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় দায়ক-দায়িকারা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মানে বান্দরবানের বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করেন। এই উৎসবে তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চড়কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য চীবর কাপড় বুনে ভিক্ষুদের মাঝে চীবর দান করেন। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মহা পুণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রতী পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সেই থেকে প্রতিবছর বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারসহ পাহাড়ের বৌদ্ধ বিহারগুলো ব্যাপক আয়োজনে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব ধর্মীয়ভাবে পালন করে আসছে।

